ড্রাইভিং লাইসেন্স স্মার্ট কার্ড যেভাবে করবেন
অতি গুরুত্বপূর্ণ নথি হওয়া সত্ত্বেও কাগজের ড্রাইভিং লাইসেন্স তোলা নিয়ে ছিল হাজারও ঝামেলা। গ্রাহকদের অনেকবার দ্বারস্থ হতে হতো বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয়ে। দেশের ডিজিটাল ব্যবস্থায় ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তিও সহজ হয়েছে। জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্ট ন্যাশনাল আইডি (এনআইডি) কার্ডের মতো ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্যও প্রস্তুত করা হয়েছে স্মার্ট কার্ড। এই ড্রাইভিং লাইসেন্স স্মার্ট কার্ড পাওয়ার উপায় জেনে নেওয়া যাক।
বিআরটিএ’র ড্রাইভিং লাইসেন্স স্মার্ট কার্ড কী
ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া থেকে শুরু করে রাস্তাঘাটে এর তদারকের প্রক্রিয়াকে আরও সহজ ও গতিশীল করার লক্ষ্যে বিআরটিএ’র পরিষেবা স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স।
এই স্মার্ট কার্ডে একজন গাড়িচালকের জীবন বৃত্তান্তসহ গাড়ি চালনার সব তথ্য লিপিবদ্ধ থাকে। এর মাধ্যমে রাস্তাঘাটে চলাচলের সময় চালকের বৈধতা যাচাইয়ে ট্রাফিক পুলিশের তদারকের কাজ খুব কম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হবে।
২০১৬ সালে এই কার্যক্রম শুরু হলেও স্মার্ট কার্ড প্রাপ্তি নিয়ে ছিল জটিলতা। পূর্বে বিএসপি (বিআরটিএ সার্ভিস পোর্টাল) পোর্টালে লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স ও স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আলাদা আবেদন করতে হতো। কিন্তু, ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর এই দুটিকে একত্রীত করে একটি কম্বাইন্ড অনলাইন ফর্ম চালু করা হয়। শুধু তাই নয়, আবেদন পদ্ধতি এবং স্মার্ট কার্ড প্রদান আরও সহজতর করার জন্য এ সময় আরও কিছু বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক সেই বিধিমালা।
বিআরটিএ’র স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের সুবিধা
১. নতুন নিয়মে আবেদনকারীকে তিন থেকে চার বারের পরিবর্তে শুধু একবার পরীক্ষাকেন্দ্রে যেতে হয়। আর এই একদিনেই লিখিত, মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষাসহ বায়োমেট্রিক এনরোলমেন্টও সম্পন্ন করা হয়।
২. বিএসপি পোর্টালে নিবন্ধনকারীরা ঘরে বসেই অনলাইন ভেরিফিকেশন বেজড কিউআর কোড সম্বলিত লার্নার লাইসেন্স পেয়ে যান। এটি মূলত স্মার্ট কার্ড হাতে পাওয়ার আগ পর্যন্ত সারা দেশে মোটরযান চালানোর অস্থায়ী অনুমতিপত্র।
৩. এছাড়াও এই পোর্টালের সেবার মধ্যে আছে লাইসেন্স ফি প্রদান, পরীক্ষার ফল জানা, স্মার্ট কার্ড আবেদন দাখিল এবং আবেদনপত্র বা স্মার্ট কার্ডের বর্তমান স্ট্যাটাস জানার সুবিধা।
৪. ড্রাইভিং লাইসেন্সের এই স্মার্ট কার্ড প্রতিটি গ্রাহকের কাছে ডাকযোগে পাঠানো হয়।
বিআরটিএ স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার পূর্বশর্ত
লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্সের পূর্বশর্তগুলো এই আবেদনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। অর্থাৎ, গাড়ি চালনার জন্য আবেদনকারীর মানসিক ও শারীরিক সুস্থতা থাকতে হবে। কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণি পাস হতে হবে। পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ২১ বছর এবং অপেশাদারের বেলায় ন্যূনতম ১৮ বছর বয়সী হতে হবে। সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বিষয় হলো—লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা যাবে না।
বিআরটিএ স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স করার পদ্ধতি
লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদনের জন্য যে কাগজপত্র প্রয়োজন, তার অধিকাংশই এই আবেদনের ক্ষেত্রেও দরকার। সেগুলো হলো—
১. আবেদনকারীর সাম্প্রতিক পাসপোর্ট সাইজের ছবি (৩০০/৩০০ পিক্সেল)
২. রেজিস্টার্ড ডাক্তারের দেওয়া মেডিকেল সনদপত্র
৩. আবেদনকারীর এনআইডি
৪. আবেদনকারীর গ্যাস/বিদ্যুৎ/পানি যেকোনো একটি (আবেদনকারীর বর্তমান ঠিকানা তার এনআইডি থেকে ভিন্ন হলে, বর্তমান ঠিকানার একটি ইউটিলিটি বিল)
৫. শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র
স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য অতিরিক্ত নথি হিসেবে লাগবে—লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স পাসের প্রমাণপত্র।
প্রযোজ্য ক্ষেত্রে পুলিশি তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য এই লিঙ্ক-১ ও লিঙ্ক-২ দেখুন।
এই নথিগুলো অনলাইন আবেদনের পূর্বেই স্ক্যান করে প্রস্তুত রাখতে হবে। পাসপোর্ট সাইজের ছবির স্ক্যান করা ফাইল ১৫০ কেবি (কিলোবাইট), আর বাকি সবগুলো ফাইলের সাইজ ৬০০ কেবির বেশি হওয়া যাবে না।
অনলাইনে বিআরটিএর নতুন স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন পদ্ধতি
অনলাইনে আবেদনের জন্য সরাসরি চলে যেতে হবে বিএসপি পোর্টালে (https://bsp.brta.gov.bd/)। আবেদনের জন্য প্রথমেই নিবন্ধনের মাধ্যমে এই পোর্টালের অধীনে নিজের একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। এই অ্যাকাউন্টে ড্রাইভিং সম্পর্কিত গ্রাহকের যাবতীয় তথ্য জমা থাকবে। চলুন, ধাপে ধাপে এই আবেদন প্রক্রিয়াটি জেনে নেওয়া যাক—
নিবন্ধন
প্রথমে বিএসপি পোর্টালের একদম উপরে ডানদিকে ‘নিবন্ধন’ মেনুতে ক্লিক করতে হবে। পুরো নিবন্ধন সম্পন্ন করার জন্য গ্রাহকের জন্ম তারিখ, এনআইডি ও মোবাইল নম্বর দিতে হবে।
মোবাইল নম্বরে আসা ওটিপির (ওয়ান-টাইম-পাসওয়ার্ড) মাধ্যমে মোবাইল নম্বরটি যাচাই করে নিতে হবে। তারপর পাসওয়ার্ড নির্ধারণের মাধ্যমে শেষ হবে নিবন্ধন প্রক্রিয়া।
এখন প্রদত্ত মোবাইল নাম্বার ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করা যাবে বিএসপি পোর্টালে। যারা ইতিপূর্বে নিবন্ধন করেছেন, তারা এই সাইটের ‘প্রবেশ করুন’ মেনুতে যেয়ে লগইন করে সরাসরি নিজেদের অ্যাকাউন্টে চলে যেতে পারবেন।
শিক্ষানবিশ বা লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন
লগইনের পরপরই আসবে গ্রাহক ড্যাশবোর্ড। এর বামদিকে প্রদর্শিত মেনুগুলো থেকে ‘ড্রাইভিং লাইসেন্স’র সাবমেনু ‘ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন’ এ ক্লিক করতে হবে। এবার যে নতুন পেজটি আসবে, তাতে আবেদনের পূর্বশর্ত ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের লিস্ট দেখানো হবে। ‘এখানে ক্লিক করুন’ লিঙ্ক থেকে মেডিকেল সার্টিফিকেট ফর্মটি ডাউনলোড করে নিতে হবে। এই ফর্মের ভিত্তিতে রেজিস্টার্ড ডাক্তার বা মেডিকেল অফিসারের নিকট থেকে মেডিকেল সার্টিফিকেট গ্রহণ করতে হবে। পেজে উল্লেখিত শর্তগুলো মেনে ‘আমি সম্মত’ বাটনে ক্লিক করে পরবর্তী ধাপে অগ্রসর হতে হবে।
জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য
এই ধাপের মাধ্যমেই শুরু হবে ড্রাইভিং লাইসেন্সের পাঁচটি ধাপ সমন্বিত আবেদন প্রক্রিয়া। যেহেতু পূর্বে একবার এনআইডি সংখ্যা দেওয়া হয়েছে, তাই এখানে সে অনুসারে প্রাথমিক তথ্যাবলি স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রদর্শিত হবে। তারপর দ্বিতীয় ধাপে যাওয়ার জন্য ‘নেক্সট’ বাটনে ক্লিক করতে হবে।
ড্রাইভিং লাইসেন্সের তথ্য
এখানে ড্রাইভিং লাইসেন্সের ভাষা, ধরন, মোটরযানের শ্রেণি, আবেদনকারীর ধরন বাছাই করতে হবে। শিক্ষানবিশ বা লার্নার এবং স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্সের বিষয়টি এখানেই নির্ধারণ করতে হবে আবেদনের ধরণ নির্বাচনের মাধ্যমে। তারপর ‘নেক্সট’ বাটনে ক্লিক করলে তথ্য সফলভাবে সংরক্ষিত হয়েছে, এই মর্মে একটি পপআপ বার্তা আসবে। তাতে ‘ওকে’ করে পরের ধাপে যেতে হবে।
আবেদনকারীর প্রাথমিক তথ্য
এখানে কিছু তথ্যাদি এনআইডি অনুসারে আগে থেকে প্রদর্শিত থাকবে। কিছু তথ্য টাইপ করে লিখতে বলা হবে। তার মধ্যে লাল তারকা চিহ্নিত বক্সগুলো অবশ্যই পূরণ করতে হবে। এনআইডির বাইরে আবশ্যিক তথ্য হিসেবে শিক্ষাগত যোগ্যতা, রক্তের গ্রুপ, পেশা, বৈবাহিক অবস্থা, জাতীয়তা এবং দ্বৈত নাগরিকত্ত আছে কি না, তা উল্লেখ করতে হবে। এরপর ‘নেক্সট’এ ক্লিক করে পূর্বের ন্যায় পপআপ বার্তায় ‘ওকে’ করতে হবে।
ঠিকানা ও যোগাযোগের তথ্য
এই ধাপে আবেদনকারীর সঙ্গে যোগাযোগের জন্য স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানাসহ জরুরি যোগাযোগের তথ্য অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। এনআইডিতে থাকা স্থায়ী ঠিকানা বামদিকে বাংলায় প্রদর্শিত থাকবে, আর ডানদিকে সেগুলো ইংরেজিতে লিখতে হবে।
বর্তমান ঠিকানা যদি এখনও অপরিবর্তিত থাকে, তাহলে ডান দিকে একইভাবে ইংরেজিতে লিখতে হবে। তা না হলে ‘না’ বাটনে ক্লিক করে পরিবর্তিত বর্তমান ঠিকানা বাম পাশে বাংলায় আর ডান পাশে ইংরেজিতে টাইপ করে লিখে দিতে হবে। তারপর সেই আগের মতো ‘নেক্সট’ ও ‘ওকে’ বাটনে ক্লিক করে পরের ধাপে অগ্রসর হতে হবে।
সংযুক্তি ও স্মার্ট কার্ড বিতরণ তথ্য
এই শেষ ধাপে আগে থেকে সংগ্রহে রাখা প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের স্ক্যান কপিগুলো সংযুক্ত করতে হবে। ‘চুজ ফাইল’-এ ক্লিক করে সফলভাবে আপলোড করার পর ‘সংরক্ষণ করুন’ বাটনে ক্লিক করলে ফাইলগুলো সংযুক্ত হয়ে যাবে। ‘দেখুন’ বাটনে ক্লিক করে তা একবার দেখে নেওয়া যেতে পারে।
ডাকযোগে কার্ড প্রেরণের জন্য ঠিকানা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই নির্দিষ্ট করা থাকবে। তবে গ্রাহক কার্ড প্রাপ্তির জন্য নিজের সুবিধামতো স্থায়ী বা বর্তমান যেকোনো ঠিকানা বাছাই করতে পারেন। এমনকি এর বাইরে অন্য জায়গাও তিনি ঠিক করতে পারেন। সেক্ষেত্রে ‘আদার্স’ নির্বাচন করে পূর্ণ ঠিকানা উল্লেখ করে দিতে হবে।
সবশেষে ‘সাবমিট’ বাটনে ক্লিক করার পর শেষবারের মতো তথ্য যাচাই করতে বলা হবে। এখানে কোনো পরিবর্তন প্রয়োজন হলে আবেদনকারী প্রয়োজনীয় পরিবর্তনগুলো করে নিতে পারবেন। আর সবকিছু ঠিক থাকলে ‘ফি জমা’ বাটনে ক্লিক করতে হবে।
ফি জমা
এখানে মনে রাখা জরুরি, এখানে শুধু লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন ফি জমা দিতে হবে। পুরো আবেদনটি প্রথমে এক নজরে দেখানো হবে। সব ঠিক থাকলে ‘ফি জমা দিন’ বাটনে ক্লিক করে ‘পেমেন্ট কনফারমেশন’ পেজে যেতে হবে। এখানে মোবাইল নম্বরসহ ফি জমা দেওয়ার মাধ্যম উল্লেখ করার পর পেমেন্ট শর্তাবলির পাশের বক্সটিতে টিক মার্ক দিতে হবে। তারপর ‘নিশ্চিত’ বাটনে ক্লিক করলে ফি সফলভাবে জমা হওয়ার একটি পেজ প্রদর্শিত হবে। এখানে ‘প্রিন্ট লার্নার’ বাটনে ক্লিক করলে শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং ‘হেয়ার’ বাটনে ক্লিক করলে মানি রিসিপ্ট প্রিন্ট হবে।
স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন
অনলাইন আবেদনের এই অংশে আসার পূর্বে অবশ্যই ড্রাইভিংয়ে দক্ষতা যাচাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। বিএসপি পোর্টালে গ্রাহক ড্যাশবোর্ডে ‘ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন’ মেনুতে ক্লিক করলে দেখা যাবে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বা অনুত্তীর্ণ হওয়ার বার্তাটি। এছাড়া আবেদনের সময় প্রদত্ত মোবাইল নম্বরেও জানানো হবে পরীক্ষার ফলাফল।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্তি
‘দেখুন ও পরবর্তী ধাপ’ বাটনে ক্লিক করলে সংযুক্তির পেজটি প্রদর্শিত হবে। লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদনের সময় সংযুক্ত নথিগুলো এখানে আগে থেকেই সংযুক্ত দেখাবে। আলাদাভাবে আপলোড করতে হবে পাস লার্নার; তথা ড্রাইভিং দক্ষতা যাচাই পরীক্ষা উত্তীর্ণের প্রমাণপত্র। এছাড়া প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অতিরিক্ত নথির সংযুক্ত করা যেতে পারে।
ফি পরিশোধ
ব্যাংকের মাধ্যমে ফি দিতে হলে ‘ব্যাংকের মাধ্যমে ফি জমা’ আর অনলাইনে দিতে হলে ‘অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর ফি জমা’ বাটনে ক্লিক করতে হবে। অনলাইনের ক্ষেত্রে অনলাইন পেমেন্ট পেজে ‘পে নাউ’ বাটনে ক্লিক করে পরিশোধ সম্পন্ন করতে হবে।
আর ব্যাংকের ক্ষেত্রে ব্যাংক থেকে প্রদত্ত মানি রিসিপ্টে উল্লেখিত ই-ট্র্যাকিং নম্বরটি সংগ্রহ করতে হবে। অতঃপর তা ‘ই-ট্র্যাকিং নম্বর প্রবেশ করুন’ ঘরে লিখে ‘ই-ট্র্যাকিং নম্বর যাচাই’ বাটনে ক্লিক করতে হবে।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে পরিশোধের যাবতীয় তথ্য এক নজরে প্রদর্শন করা হবে। তারপর ‘সাবমিট’ বাটনে ক্লিক করলেই সম্পন্ন হবে ফি পরিশোধ।
ই-পেপার ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহ
স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন দাখিল করা শেষ। এখন এটি বিআরটিএ কর্তৃক অনুমোদিত হলে ড্যাশবোর্ডে ই-পেপার লাইসেন্স ফর্ম প্রদর্শন করা হবে। এটি ডাউনলোড ও প্রিন্ট করে স্মার্ট কার্ড প্রাপ্তির আগ পর্যন্ত বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। এছাড়াও স্মার্ট কার্ড আসার আগ পর্যন্ত লাইসেন্সের সর্বশেষ অবস্থা দেখানো হবে ড্যাশবোর্ডে।
ড্রাইভিং লাইসেন্সের স্মার্ট কার্ড প্রাপ্তি
ড্রাইভিং লাইসেন্সের স্মার্ট কার্ড প্রস্তুতির সার্বিক কার্যক্রম শেষ হয়ে গেলে ড্যাশবোর্ডে তা প্রদর্শন করা হবে। পরিশেষে আবেদনে উল্লেখিত ঠিকানায় ডাকযোগে প্রেরণ করা হবে ড্রাইভিং লাইসেন্সের স্মার্ট কার্ডটি।
বিআরটিএ স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য প্রয়োজনীয় খরচ
শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য শুধু বিএসপি পোর্টালের মাধ্যমে ফি পরিশোধ করতে হবে। যেকোনো একটি মোটরযানের জন্য ফি ৫১৮ টাকা, আর দুটি মোটরযানের জন্য ফি ৭৪৮ টাকা।
স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদনের সময় ১০ বছর মেয়াদি অপেশাদার লাইসেন্সের জন্য দিতে হবে চার হাজার ৫৫৭ টাকা। আর পাঁচ বছর মেয়াদের পেশাদার লাইসেন্সের জন্য খরচ হচ্ছে দুই হাজার ৮৩২ টাকা।
শেষাংশ
বিআরটিএ স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স করার সময় প্রথম সতর্কতা হলো প্রতিটি তথ্য সঠিকভাবে দেওয়া। কোনো ভুয়া তথ্য দেওয়া হলে লার্নার এবং স্মার্ট কার্ড উভয় ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন বাতিল করা হবে। শুধু তাই নয়, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ভুয়া তথ্যদানকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দ্বিতীয়ত, দক্ষতা যাচাইয়ের পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়ার বিষয়টি আমলে নিতে হবে। কেননা অকৃতকার্য হলে আবার নতুন করে পরীক্ষার জন্য তারিখ চেয়ে আবেদন করতে হবে। তাই নিরবচ্ছিন্নভাবে ড্রাইভিং লাইসেন্স কার্ড হাতে পেতে হলে এই বিষয়গুলোতে সতর্কতা অবলম্বন বাঞ্ছনীয়।