জনপ্রতিনিধিদের খেয়াল খুশিমতো অর্থ খরচের সুযোগ নেই : তাজুল ইসলাম
জনপ্রতিনিধিদের খেয়াল খুশি মতো অর্থ খরচ করার সুযোগ নেই জানিয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘জনপ্রতিনিধিরা যতটা মানুষের কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ পায়, তা অন্য কোনো পেশার মানুষের পক্ষে সম্ভব হয় না। নির্বাচনের জন্য হোক অথবা মানুষের সেবা করার জন্য হোক, সমাজে জনপ্রতিনিধিদেরকে মানুষের সঙ্গে মিশে থাকতে হয়। মানুষের অভাব অনটন থেকে শুরু করে দুঃখ-দুর্দশা এবং বিভিন্ন মতবিরোধে বিচার সালিশ করতে হয় জনপ্রতিনিধিদেরকেই। তাই জনপ্রতিনিধিরা যখন সমাজের সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়, মানুষ তাদের সব সমস্যা নির্দ্বিধায় জনপ্রতিনিধিদেরকে বলতে পারে, তখন সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী।’
আজ রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউটে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত কাউন্সিলরদের জন্য আয়োজিত ‘সিটি করপোরেশন সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ’ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জায়েদা খাতুন। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক সালেহ আহমেদ মোজাফফর এবং সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইবরাহিম।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী শক্তিশালী স্থানীয় সরকারব্যবস্থার জন্য শুধু অর্থ বরাদ্দের প্রয়োজন এ ধারণার বিরোধিতা করে বলেন, ‘সরকারি যেকোনো অর্থ একটি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে খরচ হয়, সেখানে নিজের খেয়াল খুশি মতো খরচ করার সুযোগ নাই। অর্থ বরাদ্দের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে তৃণমূল পর্যায়ে উন্নয়নের সঙ্গে মানুষের অংশগ্রহণ, যাতে সবাই নিজ নিজ সম্ভাবনাকে বিকশিত করার সুযোগ পায়।’
এ সময় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরদের উদ্দেশে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আপনাদের নিজ নিজ এলাকায় সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে নগরায়ণ হলে তার সুবিধা সবাই ভোগ করবে। অপরিকল্পিত নগরায়ণ হলে তা টেকসই হয় না যেমনি, তেমনি তাতে মানুষের ভোগান্তি বাড়ে।’ তাই কাউন্সিলরদের নিজ নিজ এলাকার উন্নয়নে আরও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বায়নের এই যুগে মানুষ একা বেঁচে থাকতে পারে না। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আমাদেরকে টিকে থাকতে হবে।’
ডেঙ্গু রোগের উদাহরণ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনি একা সচেতন হলে সামগ্রিকভাবে তা ডেঙ্গু প্রতিরোধে কার্যকর হচ্ছে না। পাড়া-প্রতিবেশী থেকে শুরু করে সবাই যখন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশগ্রহণ করবে, তখনই ডেঙ্গুর মতো রোগের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।’
একা স্বার্থপরের মতো টিকে থাকার সময় শেষ উল্লেখ করে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘নিজ এলাকা এবং দেশের উন্নয়নে সবাইকেই সামগ্রিকভাবে অংশগ্রহণ এবং সচেতন হতে হবে। জনগণকে জাগিয়ে তোলা এবং সচেতন করার ক্ষেত্রে কাউন্সিলরদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।’
এ সময় আরও বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইবরাহিম। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরদের জন্য পাঁচ দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণ কর্মশালা তাদের দক্ষতা এবং আইন ও বিধি সম্পর্কে জ্ঞানের পরিসর বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে আশা প্রকাশ করেন তিনি।