যেসব পোশাক নিষিদ্ধ করতে আইন হচ্ছে চীনে
‘জাতির অনুভূতিকে আঘাত করে’ এমন পোশাক নিষিদ্ধ ও বেআইনি ঘোষণা করতে যাচ্ছে চীন। এ সংক্রান্ত একটি আইনও করতে যাচ্ছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। সম্ভাব্য আইনের খসড়া অনুযায়ী, বিষয়টি নিয়ে অস্পষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, আইনটি প্রয়োগের উপযোগিতা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। আজ সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছে ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপি।
প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী, সরকার বিরোধী বক্তব্য দেওয়া ও মানহানিকর পোশাক পরা দুটি বিষয়ই চীনের জনগণের জন্য ক্ষতিকর। তাছাড়া জাতির অনুভূতিতে এই দুটি বিষয়ই আঘাত করে । প্রস্তাবিত এই আইন অমান্য করা হলে জরিমানা বা জেল হতে পারে। তবে, কোন ধরনের পোশাক নিষিদ্ধ হচ্ছে তা ওই আইনে সুনির্দিষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে বেইজিংয়ের ২৩ বছর বয়সী এক বাসিন্দা এএফপিকে বলেন, ‘পোশাকের বিষয়টি অনেক জটিল। এই জাতীয় প্রস্তাবগুলো সামনের দিকে নেওয়ার আগে মানদণ্ড প্রতিষ্ঠা করা দরকার। মানদণ্ড নির্ধারণের কর্তৃপক্ষ কারা হবে বা কীভাবে আইনটি প্রয়োগ করা হবে তা বেশ সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।’
উদ্বিগ্ন এই নারী আরও বলেন, ‘চুরি বা ডাকাতিকে সুনির্দিষ্টভাবে যেভাবে সঠিক বা ভুল বলা যায়, ঠিক তেমনিভাবে পোশাকের বিষয়ে কীভাবে তা ব্যাখ্যা করা হবে তা পরিষ্কার নয়।’
প্রস্তাবিত আইনটি নিয়ে চীনের আইন বিশেষজ্ঞরা বেইজিংয়ের ওই নারীর সুরেই কথা বলেছেন। তারা এমনটি বলেছিলেন চলতি মাসের শুরুর দিকে যখন আইনের ধারাগুলোর বিষয়ে জনগণের মতামত নেওয়া জন্য বিষয়টিকে উন্মুক্ত করা হয়েছিল। মতামত গ্রহণের এই সময়সীমা আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর শেষ হয়ে যাবে।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ওয়েবোতে এক পোস্টে সিনগুয়া ইউনিভার্সিটির লাও ডংইয়ান লেখেন, ‘প্রস্তাবিত আইন শাস্তির মানদণ্ডকে অস্পষ্ট করে দেবে। এই সুযোগ কাজে লাগাবে প্রশাসন।’
পোশাক বা ব্যানারে সরকারবিরোধী কিছু বার্তা থাকলে সেসব ইস্যুতে এখনই কঠোর মনোভাব দেখাচ্ছে চীনের পুলিশ। রাজনৈতিক বার্তা আছে এমন পোশাক পরা ব্যক্তিকে শাস্তিও দেওয়া হচ্ছে। আর আইনটি পাস হলে সরকার বিরোধীদের সহজেই শায়েস্তা করতে পারবে কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি নিষিদ্ধ করতে পারবে সুনির্দিষ্ট পোশাক।
চলতি মাসের শুরুর দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর শেনজেনে এক ব্যক্তিকে হেফাজতে নিয়ে প্রশ্ন করছে দেশটির পুলিশ সদস্যরা। স্কার্ট পরে লাইভস্ট্রিমিং করায় পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছিল। আর এতেই নতুন করে দেশটিতে বাকস্বাধীনতা নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা।