চীনে জাপানের সামুদ্রিক খাদ্যের আমদানি কমেছে
সুনামিতে বিধ্বস্ত ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের শোধিত তেজস্ক্রিয় পানি গত মাস থেকে সাগরে ছাড়ছে জাপান। এর জেরে টোকিও থেকে সব ধরনের সামুদ্রিক খাদ্য আমদানি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল বেইজিং। আর এতেই কমেছে চীনে জাপানের সামুদ্রিক খাদ্যের আমদানি। চীনের শুল্ক কর্তৃপক্ষের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।
চীনের শুল্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত আগস্টে চীনে জাপানের সামুদ্রিক খাদ্য আমদানি তার আগের মাসের চেয়ে ৬৭ দশমিক ছয় শতাংশ কমেছে।
জাপানের কৃষি ও মৎস্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, চীনই হচ্ছে দেশটির শীর্ষ সামুদ্রিক খাদ্য আমদানিকারক দেশ। গত বছর এশিয়ার বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটি প্রতিবেশী জাপান থেকে ৮৪ দশমিক চার দশমিক বিলিয়ন ইয়েন (জাপানের মুদ্রা) বা ৫৭১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সামুদ্রিক খাদ্য আমদানি করেছিল। তবে, ফুকুশিমার শোধিত পানি সাগরে ফেলার পর থেকেই এই আমদানি কমছে।
২০১১ সালের মার্চে ভূমিকম্প ও সুনামিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় টোকিওর ফুকুশিমা-দাইছি বিদ্যুৎকেন্দ্র। ওই প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণ হারান ১৮ হাজার মানুষের। এই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্ষতিগ্রস্ত চুল্লিকে শীতল রাখার জন্য পানি ব্যবহার করা হয়। হিসেব অনুযায়ী, চুল্লি শীতল করতে ব্যবহৃত হওয়া ১৩ লাখ ৪০ হাজার টন তেজস্ক্রিয় পানি সংরক্ষণ করা হয়েছে, যা দিয়ে ৫০০টিরও বেশি অলিম্পিক গেমসের সুইমিং পুল ভরে ফেলা সম্ভব। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র শীতল রাখতে ব্যবহৃত পানি গত ২৪ আগস্ট থেকে প্রশান্ত মহাসাগরে ফেলছে জাপান। শোধিত এসব পানি সাগরে ফেলতে সর্বমোট ৩০ বছর লাগবে বলে জানিয়েছে টোকিও। সাগরে শোধিত পানি ফেলার প্রতম দিনেই জাপানের সামুদ্রিক পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় চীন।
সাগরে ফুকুশিমার শোধিত পানি ফেলানোর বিরোধিতা করেছিল জাপানের জেলেরা। এতে করে তাদের শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে বলে শঙ্কা তাদের।
চীনের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও জাপান সাগরে ফেলা পানিকে নিরাপদ বলছে জাপান। সাগরে ফেলা পানি দূষিত বা তেজস্ক্রিয় নয়, এমনটা অনেক আগে থেকেই আশ্বস্ত করে আসছে তারা। এমনকি, আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) পানি ফেলার জন্য অনুমতি দিয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।