ডিএনএ টেস্ট রিপোর্ট পক্ষে আসায় বড় মনিরের জামিন
ধর্ষণ মামলায় টাঙ্গাইল আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনিরের হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট বড় মনিরের পক্ষে আসায় আপিল বিভাগ এ আদেশ দিয়েছেন।
আজ সোমবার (৯ অক্টোবর) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগে এই ডিএনএ টেস্ট রিপোর্টের ওপর শুনানির পর আদালত এ আদেশ দেন। এই আদেশের ফলে বড় মনিরের কারামুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী।
আদালতে বড় মনিরের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী।
এর আগে আপিল বিভাগে দাখিল করা ডিএনএ টেস্টের রিপোর্টে বলা হয়, ধর্ষণের শিকার নারীর গর্ভে জন্ম নেওয়া নবজাতকের পিতা টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনির নন। নবজাতকের ডিএনএর সঙ্গে বড় মনিরের ডিএনএ মেলেনি। পিবিআই এই রিপোর্ট দাখিল করে।
গত ২১ আগস্ট ধর্ষণ মামলায় গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনিরের হাইকোর্টের দেওয়া জামিন ৯ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত থাকবে বলে আদেশ দেন আপিল বিভাগ। একই এই সময়ের মধ্যে ধর্ষণের শিকার ওই নারীর গর্ভে জন্ম নেওয়া নবজাতকের ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দেন আদালত। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী। বড় মনিরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা।
এর আগে ১১ সেপ্টেম্বর ওই নবজাতকের ডিএনএ টেস্ট হয় বলে আদালতকে জানান বড় মনিরের আইনজীবী। এদিকে ২১ আগস্ট হাইকোর্টের দেওয়া বড় মনিরের জামিন ৯ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত থাকবে বলে আদেশ দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। এ সময়ের মধ্যে ওই নবজাতকের ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দেন আদালত। তারই ধারাবাহিকতায় এটি আদালতে জানানো হয়।
গত ৫ এপ্রিল রাতে টাঙ্গাইল সদর থানায় গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনিরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়। মামলায় ধর্ষণের কারণে নারীর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়। আসামি করা হয় বড় মনির ও তার স্ত্রী নিগার আফতাবকে। পরে ভুক্তভোগী নারীর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার প্রমাণ পায় মেডিকেল বোর্ড। এরপর ৬ এপ্রিল আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেন ওই নারী। পরে তিনি নবজাতকের জন্ম দেন।
মামলায় ওই নারী অভিযোগ করেন, গোলাম কিবরিয়া তার পূর্বপরিচিত। ১৭ ডিসেম্বর তাকে শহরের আদালত পাড়ায় নিজের বাড়ির পাশের একটি ভবনে ডেকে নেন বড় মনির। সেখানে তাকে ধর্ষণ করেন ও আপত্তিকর ছবি তুলে রাখেন। পরে ওই ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, একপর্যায়ে ওই নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বিষয়টি জানার পর সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ দিতে থাকেন বড় মনির। তবে ভুক্তভোগী রাজি না হওয়ায় ২৯ মার্চ তাকে শহরের আদালত পাড়ায় বড় মনিরের শ্বশুরবাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে একটি কক্ষে আটকে রেখে তাকে আবারও ধর্ষণ করেন বড় মনির। গত ১৫ মে ধর্ষণ মামলায় বড় মনিরের জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহমুদুল মহসীনের আদালত।
বড় মনির টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভুঞাপুর) আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ওরফে ছোট মনিরের বড় ভাই। তিনি জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব।