চীনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং মারা গেছেন
সংস্কারবাদী আমলা হিসেবে পরিচিত চীনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) দিনগত রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সাংহাইয়ে মারা যান তিনি। খবর এএফপির।
এক সময় প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের উত্তরসূরি হিসেবে মনে করা হতো লি কেকিয়াংকে। তবে, শির অধীনে ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় আরও আধুনিক কমিউনিস্ট পার্টির ইমেজ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিলেন তিনি।
ঝানু আমলা হিসেবে পরিচিত লি ছিলেন ইংরেজিতে বেশ পারদর্শী। তা ছাড়া তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় অর্থনৈতিক সংস্কারের বিষয়ে সোচ্চার ছিলেন।
চীনের গরিব একটি প্রদেশ আনহুইয়ের কমিউনিস্ট পার্টির একজন নিম্নসারির নেতার ছেলে লি ১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৭৬ সালের সাংস্কৃতিক বিপ্লবের টালমাটাল সময়ে কাজ করতেন একজন সাধারণ শ্রমিক হিসেবে। তবে, পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের ওপর ডিগ্রি নেওয়ার সময় তিনি পশ্চিমা এবং উদার রাজনৈতিক তত্ত্বের প্রতি আকৃষ্ট হন। এ সময় তিনি আইনের ওপর লেখা একজন বৃটিশ বিচারকের বইও অনুবাদ করেন।
আশির দশকে কমিউনিস্ট পার্টির উচ্চপদে নিযুক্ত হওয়ার পর লি কেকিয়াং বেশ রক্ষণশীল হয়ে ওঠেন। একজন আমলা হিসেবে তিনি নিজের কাজ চালিয়ে যান, কিন্তু তার সহপাঠীরা ১৯৮৯ সালের তিয়ানআনমেন আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। লি এরপর হেনান প্রদেশ ও উত্তরপূর্বের লিয়াওনিং প্রদেশের শীর্ষ কর্মকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হন। এই দুটি প্রদেশই অর্থনৈতিকভাবে বেশ সাফল্য অর্জন করে। তবে হেনান প্রদেশের কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ পদে থাকার সময় এইচআইভি এইডস ছড়িয়ে পড়া নিয়ে এক স্বাস্থ্য কেলেঙ্কারিতে তার ইমেজ কিছুটা ক্ষুণ্ন হয়।
এরপর লি কেকিয়াং এক সময়ের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাওয়ের ডেপুটি হিসেবে নিয়োগ পান। চীনের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে তিনি বেশ পারদর্শিতার পরিচয় দেন। একপর্যায়ে তার এসব কর্মকাণ্ড সংকুচিত হয়ে যায় প্রেসিডেন্ট শির কর্তৃত্বের আড়ালে। তাই একসময় তাকে শির প্রতিদ্বন্দ্বি হিসেবে দেখা হতো।
১৯৯০ সাল থেকে ২০০০ সাল নাগাদ লির কর্তৃত্বের সময় চীনের অর্থনীতি সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয়। আর তিনি যখন তার দায়িত্ব থেকে সরে যান, তখন চীনের অর্থনীতিতে দেখা দেয় সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধি।