‘কী হবে বলতে চাই না তবে নেতৃত্বশূন্য করে দেওয়া হবে’
রাজধানীর শাহজাহানপুর থানায় নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনের মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস রিমান্ড শুনানিকালে আদালতে বলেছেন, ‘আমার মতো নেতাদের শেষ করে দেওয়া হবে। এক সময় বাংলাদেশ নেতৃত্বশূন্য হবে, যেদিন কোনো নেতা থাকবে না। কী হবে বলতে চাই না। তবে নেতৃত্বশূন্য করে দেওয়া হবে।’
পরে গতকাল বুধবার (১ নভেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিন পাঁচদিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। জনাকীর্ণ আদালতে মির্জা আব্বাসকে রিমান্ডে নেওয়ার স্বপক্ষে ও বিপক্ষে যুক্তি তুলে ধরছিলেন আইনজীবীরা। তখন মির্জা আব্বাস আদালত কক্ষে বসে ছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি উঠে দাঁড়িয়ে আদালতের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি কিছু কথা বলতে চাই।’ তখন বিচারক শফি উদ্দিন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতাকে কথা বলার অনুমতি দেন। এরপর মির্জা আব্বাস ডায়াসে গিয়ে কথা বলতে শুরু করেন। তিনি বলেন, ‘মাননীয় আদালত, আমার রাজনীতির বয়স ৫০ বছর। আমার হাতে বিএনপির জন্ম। জীবনে বহু মিটিং করেছি। এরশাদ সরকারের পতন ঘটিয়েছি। গত ১৫ বছর ধরে আন্দোলন করছি। মাননীয় আদালত, কখনো কি দেখেছেন, এমন কোনো গণ্ডগোল হয়েছে?’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমার মতো নেতাদের শেষ করে দেওয়া হবে। এক সময় বাংলাদেশ নেতৃত্বশূন্য হবে, যেদিন কোনো নেতা থাকবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘মাননীয় আদালত, ফিউচার রেফারেন্সের জন্য আমি এসব কথা বলে গেলাম। কী হবে বলতে চাই না। নেতৃত্বশূন্য করে দেওয়া হবে।’
এর আগে মির্জা আব্বাসের আইনজীবী মোসলেহ উদ্দিন জসীম আদালতের কাছে অভিযোগ করেন, মামলায় মির্জা আব্বাসের বয়স উল্লেখ করা হয়েছে ৫৩ বছর, যা সঠিক নয়। এ বিষয়ে মির্জা আব্বাস আদালতকে বলেন, ‘আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। আমার বয়স এখন ৭৪ বছর। পুলিশ কী লিখল জানি না।’
মির্জা আব্বাসের রিমান্ড আবেদনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু বলেন, গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপি সমাবেশের নামে নৈরাজ্য করেছে, লাঠিসোঁটা নিয়ে জানমালের ক্ষতি করেছে। পুলিশকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। অগ্নিসংযোগ করেছে। পিপি আবদুল্লাহ আবু আদালতকে আরও বলেন, ‘আন্দোলন হতে হবে অহিংস। কিন্তু সেদিন বিএনপি সমাবেশের নামে যা করেছে, সেটি গভীর ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছু নয়।’ শুনানি শেষে আদালত মির্জা আব্বাসের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।