তিন বছর আগে মারা যাওয়া সানাউল্লাহ মিয়া নাশকতা মামলার আসামি
বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী ছিলেন সানাউল্লাহ মিয়া। ২০২০ সালের ২৭ মার্চ সানাউল্লাহ ধানমণ্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে মারা যান। এর মধ্যে কেটে গেছে সাড়ে তিন বছরের বেশি সময়। কিন্তু পুলিশ বলছে, সানাউল্লাহ মিয়া গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশের দিন রাজধানীর মৌচাকে পুলিশের ওপর ককটেল ছুড়েছেন।
এ অভিযোগে ২৯ অক্টোবর সানাউল্লাহ মিয়ার বিরুদ্ধে রামপুরা থানায় নাশকতার মামলাও করেছে পুলিশ। মামলাটির বাদী রামপুরা থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুর জলিল।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, নাশকতার ওই মামলায় ২৪১ জন আসামির মধ্যে অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়াকে ২২৬ নন্বর আসামি করা হয়।
কেন একজন মৃত ব্যক্তির নামের মামলা দেওয়া হলো, এ বিষয়ে উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুর জলিলের মুঠোফোনে আজ সোমবার একাধিকবার কল করা হয়। কিন্তু, তার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা যায়নি। পরে রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মশিউর রহমানকেও কল করা হয়। কিন্তু, তাকেও মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে সানাউল্লাহ মিয়ার তৎকালীন এসোসিয়েট আইনজীবী সৈয়দ জয়নাল আবেদিন মেজবাহ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, পুলিশ কপিপেস্ট করে মামলা করেছেন। সানাউল্লাহ মিয়া স্যার তিন বছর আগে মারা গেছেন। অথচ তাকে তিন বছর পরে পুলিশের ওপর ককটেল ছুড়ে নাশকতা করার মামলা করা হয়েছে। মামলায় যে ঠিকানা ও নাম ব্যবহার করা হয়েছে, তা সানাউল্লাহ মিয়া স্যারের ঠিকানা।
এদিকে নতুন করে মামলা হওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়ার পরিবার।
সানাউল্লাহ মিয়ার বড় ছেলে শফিকুর রহমান রানা বলেন, আমার বাবা মহামারি করোনা শুরু হওয়ার আগেই মারা গেছেন। প্রায় সাড়ে ৩ বছর হয়েছে। মামলার এজাহারে যে ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে, সেটা আমাদের রামপুরার বাসার ঠিকানা।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বিএনপি-জামায়াতের মহাসমাবেশের দিন সমাবেশস্থল থেকে নাশকতা, হত্যা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করে পালিয়ে এসে আসামিরা মালিবাগ মোড়ে ১৪০০ থেকে ১৫০০ জন লোক জড়ো হয়। পরে তারা মৌচাক মার্কেটের দিক হতে পুলিশের ওপর আক্রমণ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল ছুড়তে ছুড়তে মালিবাগ রেলগেট পার হয়ে এসে রামপুরা পুলিশ বক্সে হামলা করে ক্ষতিসাধন করে। পুলিশ বাধা দিতে গেলে তাদের ওপর চড়াও হয়ে ইটপাটকেল ও ৮ থেকে ১০টি ককটেল নিক্ষেপ করে পুলিশকে হত্যার চেষ্টা করে। রাস্তার ওপর গুরুতর অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দাঙ্গা সৃষ্টি করে পুলিশের কাজে বাধা প্রদান করেন। আসামিদের সহিংসতায় এএসআই মো. রাজন শেখ, জয়নাল আবেদিন, মো. জসিম উদ্দিন গুরুতর আহত হয়ে মুগদা হাসপাতালে ভর্তি হন।
এতে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ বিপুল পরিমাণ ককটেল, ইটের টুকরো, কাঁচের টুকরো, লোহার পাইপ ও রামদা উদ্ধার করে। এ ঘটনায় দণ্ডবিধির ১৪৩/১৪৭/১৪৮/১৪৯/১৮৬/৪২৭/৩৫৩/৩৩২/৩৩৩/৩০৭/১১৪সহ ১৯০৮ সালের বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের ৩/৪/৬ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।