‘মৃত্যুপুরীতে’ পরিণত হয়েছে গাজার আল-শিফা হাসপাতাল
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফাকে মৃত্যুপুরী হিসেবে অভিহিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। আজ রোববার (১৯ নভেম্বর) বৈশ্বিক সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়, হাসপাতালটি থেকে পরিষেবা সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে তারা। আর ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলছে, হামাস নির্মূলে তারা অভিযান আরও বিস্তৃত করবে। খবর এএফপির।
প্রতিবেদনে ফরাসি সংবাদ সংস্থাটি জানিয়েছে, আল-শিফা হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে ডব্লিউএইচওসহ জাতিসংঘের অন্যান্য কর্মকর্তারা। তাদের পরিদর্শন শেষেই ডব্লিউএইচও থেকে এই ঘোষণা এলো। গত সপ্তাহ থেকে হাসপাতালটিতে অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী, যা এখনও চলমান।
এদিকে, গতকাল শনিবার উত্তর গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৮০ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছে বলে জানিয়েছে হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তারা জানিয়েছে, গাজার উত্তরাঞ্চলে একটি শরণার্থী শিবিরে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। সেখানে থাকা একটি জাতিসংঘের স্কুলে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কিছু ভিডিওতে দেখা যায়, ফিলিস্তিনের বৃহৎ শরণার্থী শিবির জাবালিয়ার ভবনের মেঝেতে রক্ত ও ধুলো পড়া। সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে অনকগুলো মরদেহ।
ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্মবিষয়ক সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) প্রধান ফিলিপ লাজারিনি হামলার ভয়াবহ চিত্র বর্ণনা করেছেন। আর ইসরায়েলে এই হামলাকে যুদ্ধাপরাধ বলছে মিসর। এর মাধ্যমে তারা জাতিসংঘকে অবমাননা করছে বলেও জানায় ফিলিস্তিনের প্রতিবেশী দেশটি। শনিবার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের আরেকটি ভবনে ইসরায়েলি হামলায় ৩২ জন নিহত হয়েছে, যার মধ্যে শিশুই ১৯ জন।। নিহত সবাই একই পরিবারের।
হামলার কথা উল্লেখ না করেই ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, জাবালিয়া অঞ্চলে একটি ঘটনা পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
এএফপি বলছে, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে গাজার আল-শিফা হাসপাতাল ইসরায়েলের অভিযানের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। তাদের দাবি, হাসপাতালটির নিচে হামাসের কমান্ড সেন্টার রয়েছে। তবে, বিষয়টি অস্বীকার করেছে হামাস ও হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা।
আজ সকালে ডব্লিউএইচও থেকে বলা হয়, জাতিসংঘের একটি মূল্যয়ন দল হাসপাতালটিতে গিয়েছে। তারা গিয়ে একটি মৃত্যুপুরী দেখতে পায়। হাসপাতালটির প্রবেশ পথেই মরদেহ পড়ে আছে। গাজার বৃহৎ হাসপাতালে ৩০০ রোগী ও ২৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, তারা এবং তাদের অংশীদাররা অবিলম্বে অবশিষ্ট রোগী, কর্মী এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার জন্য পরিকল্পনা তৈরি করছে।
যুদ্ধ বন্ধে ফের আহ্বান জানিয়েছে ডব্লিউএইচও। এমনটি না হলে গাজার মানুষদের দুঃখ দুর্দশা আরও বাড়বে বলে সতর্ক করেছে তারা।