নড়াইলে স্কুলছাত্রের হাত-পায়ের রগ কেটে দেওয়ার অভিযোগ
নড়াইল সদরে মো. আরিয়ান মোল্যা (১৭) নামে এক স্কুলছাত্রের হাত ও পায়ের রগ কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তাকে প্রথমে নড়াইল সদর হাসপাতালে, পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোরে পাঠানো হয়।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলে সদরের কাড়ার বিলে এ ঘটনা ঘটে বলে দাবি ওই স্কুলছাত্রের। ভুক্তভোগী মো. আরিয়ান মোল্যার বাড়ি নড়াইল সদর পৌরসভার মহিষখোলা গ্রামে। সে স্থানীয় একটি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র।
হাসপাতালের বেডে চিকিৎসাধীন আরিয়ান ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছে, এমন বেশ কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভিডিওতে আরিয়ান অভিযোগ করে বলেন, ‘মঙ্গলবার দুপুরের পর দাদি ডেকে বলেন, আউড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম পলাশ বাড়িতে আসছেন, তিনি কথা বলবেন। চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলার একপর্যায়ে বাড়ির মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন খান নিলুর দেহরক্ষী তুষার শেখ ও রয়েল বাড়ির মধ্যে থেকে টেনেহিঁচড়ে আমাকে একটি প্রাইভেটকারে তুলে নেন। এরপর তারা আমাকে সোজা গোবরা রোড ধরে কাড়ার বিলে নিয়ে যায়। সেখানে গাড়ি থেকে নামিয়ে ঘেরেরপারে নিয়ে তারা আমাকে কুপিয়ে জখম করে ফেলে যায়।’
আরিয়ানের পরিবার অভিযোগ করে জানায়, স্কুলছাত্র আরিয়ানের সঙ্গে স্কুলপড়ুয়া এক মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। আরিয়ানের পারিবারিক অবস্থা তার প্রেমিকার পারিবারিক অবস্থার থেকে খারাপ। তাদের প্রেমে বাধা হয়ে দাঁড়ায় মেয়ের পরিবার। এ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে ঝামেলা চলছিল। এর সূত্র ধরে হত্যার উদ্দেশ্যে এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে দাবি তাদের।
নড়াইল পৌরসভার প্যানেল মেয়র কাজী জহিরুল হক বলেন, ‘কোনো ধরনের অভিযোগ থাকলে প্রশাসনের সহযোগিতা নিতে পারত। স্থানীয় পর্যায়ে জনপ্রতিনিধি ও মাতবরদের সহযোগিতায় এটার সমাধান সহজেই করা যেত। আমার ওয়ার্ড থেকে এভাবে দিনে-দুপুরে একটি ছেলেকে তার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে হাত-পায়ের রগ কেটে দেওয়া সভ্য মানুষের কাজ হতে পারে না। এ ঘটনার সঙ্গে যারাই সম্পৃক্ত থাকুক না কেন, দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।’
নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওবাইদুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি জানার পরপরই জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে একাধিক টিমের সমন্বয়ে অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। তদন্তপূর্বক ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হবে। ভুক্তভোগীর পরিবার থেকে এখন পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি।’