গাজাবাসীকে মিসরে প্রবেশ করানোর চেষ্টায় ইসরায়েল
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার বাসিন্দাদের জোর করে প্রতিবেশী দেশ মিসরে প্রবেশ করানো চেষ্টা করছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান ফিলিপ্পে লাজারিনি এই অভিযোগ করেছেন। খবর এএফপির।
আজ রোববার (১০ ডিসেম্বর) প্রকাশিত প্রতিবেদনে ফরাসি সংবাদ সংস্থাটি জানিয়েছে, দুই মাসের বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও ইসরায়েলের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চলছে। এই যুদ্ধের জেরে সবচেয়ে বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে গাজার বাসিন্দারা। উপত্যকাটি ছেড়ে যেতে চাওয়াদের বিভিন্নভাবে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
গাজার ইস্যু নিয়ে ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান ফিলিপ্পে লাজারিনির একটি নিবন্ধ মার্কিন গণমাধ্যম লস অ্যাঞ্জেলস টাইমে প্রকাশিত হয়েছে। দেশটির স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার প্রকাশিত নিবন্ধে গাজার ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকট এবং যুদ্ধ থেকে পালিয়ে আসা বাস্তুচ্যুত বেসামরিক নাগরিকদের সীমান্তের কাছে ক্রমবর্ধমান ঘনত্বের বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি।
লাজারিনি বলেন, ‘গাজা উপত্যকার বাসিন্দাদের জোর করে সেখান থেকে বের দেওয়া হচ্ছে এমনটা মানতে নারাজ, জাতিসংঘ ও এর বেশ কয়েকটি সদস্য রাষ্ট্র, যার মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রও।’ তিনি বলেন, ‘তবে, আমরা যা প্রত্যক্ষ করছি সেই হিসেবে ফিলিস্তিনিদের মিসরে স্থানান্তরের প্রচেষ্টা হচ্ছে।’
ফিলিস্তিনে গাজার আগ্রাসনের শুরুতেই ইসরায়েলি বাহিনী গাজার উত্তরাঞ্চলে হামলা চালায়। ওই সময় উত্তরের বাসিন্দাদের দক্ষিণে যেতে বলা হয়। এর মাধ্যমেই শুরু হয় বাস্তুচ্যুতের ঘটনা। লাজারিনি বলেন, ‘দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের বাসিন্দাদের জোর করে সীমান্তের দিকে ঠেলে দেওয়া হলো দ্বিতীয় ঘটনা। যদি এমনটা চলতে থাকে তাহলে গাজা আর ফিলিস্তিনিদের জন্য ভূমি হবে না।’ জোর করে বাস্তুচ্যুতের ঘটনাকে দ্বিতীয় নাকবা বলে আখ্যা দিচ্ছে অনেকে।
লাজারিনির মন্তব্যের বিষয়ে জবাব চাওয়া হলেও এ নিয়ে ইসরায়েলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কোনো কথা বলেননি। তবে, গত সপ্তাহে মিসরে ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের বিষয়ে ইসরায়েল সরকারের একজন মুখপাত্র বলেছিলেন, ‘ইসরায়েল লক্ষ্য, গাজা উপত্যকার অভ্যন্তরে বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতির পথ থেকে সরিয়ে দেওয়া।’
এএফপি বলছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে রাফা সীমান্ত দিয়ে খুব অল্প সংখ্যাক গাজার বাসিন্দাই মিসরে যেতে পেরেছে। যারা গিয়েছেন তারা সবাই আহত ছিলেন ও চিকিৎসার জন্যই তাদের নেওয়া হয়। এ ছাড়া গাজায় আটকা পড়া বিদেশিদের নিরাপদে নিজ নিজ দেশে ফিরিয়ে দিতে রাফা সীমান্ত খোলা হয়। আর গাজা উপত্যকার এই সীমান্তটি ইসরায়েলের দখলে নেই।
যুদ্ধের পর থেকে এ পর্যন্ত গাজার ১৯ লাখ বাসিন্দা অভ্যন্তরে বাস্তুচ্যুতের শিকার হয়েছে। যেখানে হাজার মোট জনসংখ্যা ২৪ লাখ।