শ্রম আইনের মামলায় ড. ইউনূস আদালতে হাজির
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস আদালতে হাজির হয়েছেন। আজ সোমবার (১ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে শ্রম ভবনে তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানার আদালতে তিনি হাজির হন।
মামলাটি করেছিলেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান। ড. ইউনূস ছাড়াও এই মামলায় আসামি করা হয় গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহানের বিরুদ্ধে।
২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। মামলায় শ্রমিকলায় অভিযোগে বলা হয়, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ড. ইউনূসের গ্রামীণ টেলিকম পরিদর্শনে যান। সেখানে গিয়ে তারা শ্রম আইনের লঙ্ঘনের বিষয়ে জানতে পারেন। এর মধ্যে ১০১ শ্রমিক-কর্মচারীকে স্থায়ী করার কথা থাকলেও তাদের স্থায়ী করা হয়নি। শ্রমিকদের অংশগ্রহণের তহবিল ও কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়নি। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশের পাঁচ শতাংশ শ্রমিকদের দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি।
এর আগে গত ২২ আগস্ট এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে গত ৮ নভেম্বর আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য দেন আসামিরা। গত ৮ মে মামলা বাতিলের আবেদন খারিজের বিরুদ্ধে ড. ইউনূসের লিভ টু আপিল খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। এরপর ৬ জুন আদালত তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
এ মামলায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজন বিবাদীর আত্মপক্ষ সমর্থনে লিখিত বক্তব্যে জমা দেওয়া হয় আদালতে। সেখানে বলা হয়, গ্রামীণ টেলিকম যেসব ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে সেগুলো চুক্তিভিত্তিক। নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে তা নবায়নের মাধ্যমে পরিচালনা করা হয়। গ্রামীণ টেলিকমের প্রকল্প নোকিয়া কেয়ার ও পল্লীফোনের কার্যক্রম তিন বছরের চুক্তি অনুযায়ী পরিচালিত হয়। মেয়াদ শেষে তা নবায়ন হয়। যেহেতু গ্রামীণ টেলিকমের কার্যক্রম চুক্তির ভিত্তিতে পরিচালিত, তাই সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, আইনের ২৮ ধারা অনুযায়ী, গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানি একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। এর লভ্যাংশ বিতরণযোগ্য নয়। ফলে, মূল লভ্যাংশের পাঁচ শতাংশ অংশগ্রহণ তহবিল ও কল্যাণ তহবিলে দেওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু, গ্রামীণ টেলিকমের কর্মচারী ইউনিয়ন ওই অর্থ পাওয়ার আশায় শ্রম আদালতে মামলা করে।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরকে জানানো হয়, বিষয়টি নিয়ে মামলা চলমান। আদালত যেভাবে সিদ্ধান্ত দেবেন, সেভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।