সরকার যেন স্থায়ী রূপ লাভ করে, তা চায় ইসি : রাশেদা সুলতানা
নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের পর যেন সরকার গঠন নিয়ে কোনো ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি না হয়, সরকার যেন স্থায়ী রূপ লাভ করে, তা চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আজ বুধবার (৩ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা এ মন্তব্য করেন।
রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘প্রত্যেকটা ভোট এলেই বলা হয়, একটা অগ্নিপরীক্ষা সামনে। এবার বলা হচ্ছে অন্তর্জাতিক অগ্নিপরীক্ষার মুখে আমরা দাঁড়িয়ে আছি।’
কেন এমনটা বলা হয়, এমন প্রশ্নের উত্তরে রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘ঠিক ওই সেন্সে অগ্নিপরীক্ষা না। নির্বাচন যদি গ্রহণযোগ্য মাত্রায় না যায়, আমরা আগেও দেখেছি, ১৯৯৬ সালে কোনো একটা অন্দোলন-টান্দোলনের মধ্যে দিয়ে নির্বাচন হয়েছিল। তারপর কিন্তু সে নির্বাচনটা দীর্ঘদিন স্থায়ী হয়নি। সেই নির্বাচনটা গ্রহণযোগ্য হয়নি বলে অল্প দিনের ব্যবধানে কিন্তু আবারও একটা নির্বাচন হয়ে গেছে।’
রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘আমাদের মাথায় এরকম, আমরা এমন কোনো নির্বাচন করতে চাই না, যেটা আবার নতুন করে দেশকে সংকটের মধ্যে ফেলে। আমরা চাই যে, একটা নির্বাচন হবে আর যে সরকারই হোক না কেন, যেন সরকার স্থায়ী রূপ নেয়। যখনই সরকার অস্থায়ী অবস্থায় চলে যায়, তখন কিন্তু দেশ একটা বিপদের মুখে চলে যায়। এ সেন্স থেকেই হয়তো আমাদের মাথায় এটা আসছে, আমরা একটা ফেয়ার ইলেকশন করব।’
আজকে সেনাবাহিনী নামল, এরপর নির্বাচনি সহিংসতা কতটুকু দূর হবে বলে আপনি মনে করেন-এমন প্রশ্নের উত্তরে রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘আমাদের যত আয়োজন সব কিন্তু শান্তিশৃঙ্খলার সঙ্গে যেন ভোট হয় সে পরিবেশ সৃষ্টি করা। এটা জনগণেরও চাওয়া যেন সেনাবাহিনী মাঠে নামে। আমরা যতগুলো সংলাপ করেছি, সেখানেও সবাই বলেছেন, যেন সেনাবাহিনী মাঠে নামে। পরিবেশ যেন সুন্দর থাকে, সবাই যেন সুন্দরভাবে ভোট দিতে পারে, সেজন্যই সেনাবাহিনী নামানো হয়েছে। আমরা আশ্বাস দিয়ে বলছি ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ভোট সুন্দরভাবে হবে।’
কারও কারও বর্জনকে কেন্দ্র করে যে একটা আশঙ্কা রয়েছে, সেনাবাহিনী নামানোর ফলে সেটা কমবে কিনা- এমন প্রশ্নে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘শুধু সেনাবাহিনী নামানোর মাধ্যমে না, আমাদের যতগুলো বাহিনী রয়েছে সবাই কিন্তু এখন অনেক সক্ষম। অনেক দিক থেকে অনেক উন্নত হয়েছে। তার সঙ্গে সেনাবাহিনী ট্যাগ হয়ে যাওয়ায় অনেক সুন্দর হয়েছে বলে আমি মনে করি।’
সব দল ভোটে এলে ভোট করাটা কঠিন নাকি সহজ, এমন প্রশ্নে রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘সেটা তো আমি বলতে পারব না। এর আগে তো আমরা ভোট করি নাই। এটা আমাদের প্রথম ভোট। এটা আমার প্রথম অভিজ্ঞতা কমিশনার হিসেবে ভেতরে থেকে ভোট করা। সেহেতু আমি বলতে পারব না, ভোটে আসলে কী, আর না আসলে কী। আগে অভিজ্ঞতা অর্জন করি, তারপরে বলতে পারব। এই মুহূর্তে আসলে কী হতো, না হতো তা বলা কিন্ত সত্যিই কঠিন। কারণ, আমরা তো আসলে উনাদের পাচ্ছি না। পেয়ে যদি ভোট করতাম, তাহলে বুঝতে পারতাম কী হতো। তবে, আমি এটা বলতে পারি, ভোট এখন যেটা হচ্ছে, সেটা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণই হবে।’
প্রত্যেকটা ভোট এলেই বলা হয়, একটা অগ্নিপরীক্ষা সামনে। এবার বলা হচ্ছে অন্তর্জাতিক অগ্নিপরীক্ষার মুখে আমরা দাঁড়িয়ে আছি। কেন এমনটা বলা হয়- এ প্রশ্নের উত্তরে রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘ঠিক ওই সেন্সে অগ্নিপরীক্ষা না। নির্বাচন যদি গ্রহণযোগ্য মাত্রায় না যায়, আমরা আগেও দেখেছি, ১৯৯৬ সালে কোনো একটা অন্দোলন-টান্দেোলনের মধ্য দিয়ে নির্বাচন হয়েছিল। তারপর কিন্তু সে নির্বাচনটা দীর্ঘদিন স্থায়ী হয়নি। নির্বাচনটা গ্রহণযোগ্য হয়নি বলে আবারও অল্প দিনের ব্যবধানে কিন্তু একটা নির্বাচন হয়ে গেছে। আমরা এমন কোনো নির্বাচন করতে চাই না, যেটা আবার নতুন করে দেশকে সংকটের মধ্যে ফেলে। আমরা চাই যে, একটা নির্বাচন হবে; যে সরকারই হোক না কেন, যেন সরকার স্থায়ী রূপ নেবে। যখনই সরকার অস্থায়ী অবস্থায় চলে যায়, তখন কিন্তু দেশ একটা বিপদের মুখে চলে যায়; আমরা এটা ভাবি নাই। এ সেন্স থেকেই হয়তো আমাদের মাথায় এটা আসছে, আমরা একটা ফেয়ার ইলেকশন করব। আন্তর্জাতিক চাপ কোনো ইস্যু না, কোনো বিষয় না। কোনো দিক থেকে কোনো চাপ না। কিন্তু আমরা বিগত দিন থেকে আমাদের একটা অ্যাসেসমেন্ট, হয়ে যাওয়া নির্বাচনটা যেন কোনোভাবেই বাতিল না হয়ে যায়। এমন একটা ফেয়ার নির্বাচন যেন হয়, যেটা সব মহলে স্বীকৃতি পায়।’
ফেয়ার নির্বাচনটা কাকে দেখাতে চান আপনারা, এমন প্রশ্নে রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘দেশের জনগণ ও অন্তর্জাতিক বিশ্ব, সবাইকে আমরা দেখাতে চাই। এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে, অন্তর্জাতিক বিশ্বকে আমরা মাথায় রাখছি না। এটা অবশ্যই রাখতে হবে। আমরা বিচ্ছিন্ন কোনো দেশ নই, আমরা গোটা বিশ্বের একটা অংশ। আমরা মনে করি, এটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব, একটা ভালো ইলেকশন করা। জনগণকে আশ্বস্তের মধ্যে নেওয়া, যেন গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়। একটা ভালো ইলেকশন হলে দেশের জনগণও বলবে যে, একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছে।’
আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতার ক্ষেত্রে আপনারা আর সরকার কী একই পথে হাঁটছে- এমন প্রশ্নে রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘সরকারের সঙ্গে তো আমাদের কোনো লিয়াজোঁ নেই। কখনো কোনোদিন সরকারি কারও সঙ্গে কথাবার্তা বা ওঠাবসা নেই। তবে, পেপার পত্রিকার দৃষ্টিতে, আমরা যেটুকু খবর পাচ্ছি তাতে আমার মনে হচ্ছে, সরকারও বোধহয় চাইছে একটা ফেয়ার ইলেকশন হোক। প্রধানমন্ত্রী নিজে এবং ওবায়দুল কাদের সাহেব বা বিভিন্ন মন্ত্রীরা যেভাবে বলছেন, তাতে আমাদের মনে হচ্ছে, উনারাও একটা ফেয়ার ইলেকশন চাইছেন।’