চট্টগ্রামে বাঁধ কেটে দেওয়ায় ডুবে গেল হাট-বাজার, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া-সাতকানিয়ার সীমান্ত এলাকায় বনবিভাগের বন দখল করে গড়ে তোলা লেকের বাঁধ কেটে দিয়েছে বনবিভাগ। আর এই লেকের পানিতে সাতকানিয়া উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের হাট-বাজার, স্কুল, মাদ্রাসা, গ্রামীণ সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন অন্তত অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ। হঠাৎ পানিতে নষ্ট হয়েছে শত শত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালামাল।
শনিবার (৩ ফেব্রয়ারি) রাত থেকে এই পানি লোকালয়ে চলে আসে। সোনাকানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন বিষয়টি এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য নদভী ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত মোহাম্মদ নাছির ও মনছুর আলম ২০২১ সালে অবৈধভাবে সোনাকানিয়া ছড়ায় (দৈর্ঘ্য ২০০ ফুট, প্রস্ত ২০ ফুট ও উচ্চতা ১০০ ফুট) একটি বাঁধ দিয়ে সেখানে মৎস্য চাষ শুরু করেন। এই বাঁধ দেওয়ার কারণে লোহাগাড়া ও সাতকানিয়ার অন্তত ৪ হাজার ২৫৫ একর জমির চাষাবাধ ব্যাহত হয়। কৃষকরা এই বাঁধ নির্মাণের শুরু থেকেই অভিযোগ করে এলেও প্রশাসন অবৈধ এই কর্মযজ্ঞের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেইনি। তবে, বনবিভাগ এখন বলছে, তদন্তের সত্যতা পাওয়ার পর আইনি প্রক্রিয়া শুরু করলে স্থানীয় সংসদ সদস্য প্রফেসর ড. আবু রেজা মোহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীর হস্তক্ষেপের কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে আজ রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে সোনাকানিয়া এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, সোনাইছড়ি খালের ওপর নির্মিত স্লুইজ গেইটটি ভেঙে গেছে। শত শত মৎস্য খামারের মাছ ভেসে গেছে। জমির ফসল নষ্ট হয়েছে অন্তত ৫০০ একর।
সোনাকানিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন জানান, শনিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে বিকট আওয়াজ দিয়ে এলাকায় পানি প্রবেশ করে। এতে শতাধিক বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় হাজারও কৃষকের মাঝে বিরাজ করছে হাহাকার।
আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সাতকানিয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরাফাত সিদ্দিকী। পরিদর্শন শেষে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, লোহাগাডা উপজেলার বনভূমি অবৈধভাবে দখল করে বাঁধ তৈরির একটি সংবাদ আমরা শনিবার সংবাদপত্রে দেখেছি। বনবিভাগ ঐ বাঁধটি কেটে দিয়েছে বলে শুনেছি। আমাদের কোনো ধরনের অবহিত না করে অপরিকল্পিতভাবে বাঁধটি কেটে দেওয়ার কারণে সাতকানিয়ার অংশে বেশ ক্ষতিগ্রন্ত হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন মহলের কাছে জানাব।