বাংলাদেশের মানুষের জীবন ও ভূমি এখন অরক্ষিত : রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের জীবন ও ভূমি এখন অরক্ষিত। পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে দলে দলে লোক ও অস্ত্র বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে। আর বাংলাদেশ সরকারের অভিসন্ধিপ্রসূত নীরবতা মূলত দেশের মানুষকে নতজানু করার এক গভীর চক্রান্ত।’
আজ বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন রিজভী।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্ত অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। সেখানে বাংলাদেশের নাগরিকরা চরম নিরাপত্তাহীনতায়। সীমান্তে বাংলাদেশি এলাকায় নারী-পুরুষ কেউ নিরাপদ নয়। জীবন যাচ্ছে মর্টারশেলে। বাংলাদেশের চারিদিকে সীমান্ত এলাকায় এখন রক্তক্ষয়ী খেলা চলছে প্রতিবেশী দেশগুলোর অস্ত্রের আঘাতে। বাংলাদেশের মানুষের জীবন ও ভূমি এখন অরক্ষিত।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর শান্তির বাণী এখন দেশের সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলেছে। আমাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনী প্রতিদিনই পিছু হটছে। আর তাতে বাংলাদেশের মানুষ বিপদের সম্মুখীন হচ্ছে। অথচ সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামলে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকা ছিল সুরক্ষিত এবং জনগণ ছিল নিরাপদ।’
রিজভী বলেন, ‘এখানেই বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে পার্থক্য। বিএনপির কাছে অবৈধ ক্ষমতা নয়, জনগণের স্বার্থই বড়। এ কারণে বিএনপি তলে তলে কিংবা প্রকাশ্যে কোনোভাবেই দেশ ও জনগণের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে কারও সঙ্গে আপস করেনি। আমি আগেও বলেছিলাম, ৭ জানুয়ারি কোনো নির্বাচন ছিল না। দেশের শতকরা ৯৫ ভাগের বেশি মানুষ শেখ হাসিনার ব্যালট প্রত্যাখ্যান করে বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের ৬৩টি রাজনৈতিক দলের লিফলেট গ্রহণ করে ৭ জানুয়ারি ভোট বর্জন করেছিল। সুতরাং, ওবায়দুল কাদের র্যাব-পুলিশের পাহারায় থেকে যত কথাই বলুক, আওয়ামী লীগ বরাবরই তলে তলে আপস করা দেশ ও জনস্বার্থবিরোধী একটি চক্র।’
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তার বাচালতাপূর্ণ ও চটুল কথার দ্বারা নিজেদের অপকর্ম ও দখলদারিত্বের পাপ আড়াল করার চেষ্টা করতে গিয়ে আওয়ামী কলঙ্ক আরও তীব্র হয়ে ওঠে। কারণ, রাজনীতি নিয়ে ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য যাত্রাপালার সংলাপের ঢংয়ে সস্তা বিনোদনে ভরপুর। এই ভদ্রলোককে দেখলাম, বর্তমান বিনাভোটের সরকারপ্রধানের কাছে লেখা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেনের একটি চিঠি নিয়ে প্রায় হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছেন।’
রিজভী বলেন, “কাদের সাহেব বিএনপির প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেছেন, ‘এখন আপনাদের সাহসের উৎস কোথায়? কে সাহায্য করবে?’ ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনার এই উল্লাসেই প্রমাণিত হয়, আওয়ামী সরকারের গণভিত্তি ধসে গিয়ে এর নেতারা আত্মমর্যাদা হারিয়ে ফেলেছেন। বিএনপির সব রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস দেশের জনগণ। গত অক্টোবরে দেওয়া ওবায়দুল কাদেরের একটি বক্তব্য নিশ্চয়ই সবার মনে আছে, ‘আপস হয়ে গেছে। আমরা আছি, দিল্লিও আছে। দিল্লি আছে, আমরাও আছি।’ এই কথার অর্থ দেশের জনগণ নয়, আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব টিকে আছে দিল্লির করুণার ওপর। আওয়ামী লীগের চিরাচরিত ঐতিহ্যই হচ্ছে নিজ দেশের সার্বভৌমত্বকে দুর্বল করা। বিএসএফের গুলিতে বিজিবি মারা গেলেও আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ করার সাহস নেই।”