ঢাবির জগন্নাথ হলে ৭২ মণ্ডপে সরস্বতী পূজা
বিদ্যা ও সংগীতের দেবী সরস্বতীর কৃপা লাভের আশায় ৭২টি মণ্ডপে পূজার আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল। আজ বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে জগন্নাথ হলের মাঠে বাণী অর্চনা, আরতি ও পুষ্পাঞ্জলিতে সরস্বতীর আরাধনা করছেন শিক্ষার্থীরা। সকাল ৯টায় শুরু হয় বাণী বন্দনা এবং ১০টা ১ মিনিটে দেওয়া হয় পুষ্পাঞ্জলি।
প্রতি বছরের মতো এবারও হলের খেলার মাঠের চারিদিকে বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা পূজার আয়োজন করেছে। ৭২টি মণ্ডপের বেশির ভাগই বিভিন্ন বিভাগের থিমের আদলে গড়া। অন্য বছরের মতো এবারও এ হলের পুকুরের মাঝে বসানোর জন্য দৃষ্টিনন্দন প্রতিমা তৈরি করেছে চারুকলা অনুষদ।
ঐতিহ্যগতভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল এ পূজার মূল কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। আজ বুধবার সকাল থেকেই ঢাবির জগন্নাথ হলে পুণ্যার্থীদের ঢল নামে। শুধু সনাতন ধর্মাবলম্বীরাই নয়, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও এদিন পূজা মণ্ডপ ঘুরে ঘুরে দেখেন।
জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ ও পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মিহির লাল সাহা বলেন, মোট ৭২টি মণ্ডপে এবার সরস্বতীর বন্দনা করা হচ্ছে। এর মধ্যে হলের খেলার মাঠে প্রতিমা তৈরি করেছে ৬৯টি বিভাগ ও ইনস্টিটিউট। চারুকলা অনুষদের একটি মণ্ডপ জগন্নাথ হল পুকুরে, একটি কেন্দ্রীয় মন্দিরে, আরেকটি মণ্ডপ শিশুদের জন্য করা হয়েছে কর্মচারী কল্যাণ সমিতিতে।
জগন্নাথ হল ছাড়াও ছাত্রীদের জন্য রোকেয়া হল, শামসুন্নাহার হল, সুফিয়া কামাল হল, কুয়েত মৈত্রী হলে বীণাপাণির আরাধনায় বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, ভগবানের জ্ঞান ও বিদ্যার রূপ হলেন দেবী সরস্বতী। প্রতিবছর মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের শ্রী পঞ্চমী তিথিতে বিদ্যাদেবীর পূজা হয়। হাতে বীণা থাকে বলে সরস্বতীকে বীণাপাণিও বলা হয়।
সাদা রাজহাঁস এ দেবীর বাহন। ঐতিহ্য অনুযায়ী এদিন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পুরোহিতের মন্ত্র পাঠের মধ্য দিয়ে বিদ্যাদেবীর মন্দিরে সন্তানদের প্রথম বিদ্যার পাঠের হাতেখড়ির আয়োজন করেন।
পূজাকে কেন্দ্র করে হল প্রাঙ্গণ ও আশপাশের এলাকায় ফুল, চুড়িসহ বাহারি পণ্যের ভ্রাম্যমাণ দোকান বসেছে এবার। এছাড়াও পানিপুরি, ফুচকা, মোমো, ভেলপুরি, ঝালমুড়িসহ নানা মুখরোচক খাবার পাওয়া যাচ্ছে জগন্নাথ হলের খেলার মাঠে ও পূজা মণ্ডপের আশেপাশে। যা পেয়ে খুশি ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই।