সাকিবদের উড়িয়ে ফাইনালে লিটনের কুমিল্লা
জিতলেই ফাইনাল। হারলে বাড়বে অপেক্ষা। এমন সমীকরণের ম্যাচে প্রথম সুযোগই দারুণভাবে কাজে লাগালো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। বড় লক্ষ্যকে তুড়ি মেরে চলতি বিপিএলের প্রথম দল হিসেবে ফাইনাল নিশ্চিত করল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা।
বিপিএলের প্রথম কোয়ালিফায়ারে রংপুর রাইডার্সকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। হারলেও এখনো আশা শেষ হয়ে যায়নি রংপুরের। ফাইনালে ওঠার আরেকটি সুযোগ পাবে তারা। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে ফরচুন বরিশালকে হারাতে পারলেই দ্বিতীয় ফাইনালিস্ট হিসেবে খেলতে পারবে সাকিব আল হাসানের দল।
দিনের প্রথম ম্যাচটি ছিল লো স্কোরিং। সেই হিসেবে দ্বিতীয় ম্যাচে রান দেখেছে দুদলই। আগে ব্যাট করে জিমি নিশামের ব্যাটিং ঝড়ে ১৮৬ রানের কঠিন লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় রংপুর। যা তাড়া করতে নেমে ঝড় তোলে কুমিল্লাও। লিটন দাস ও তাওহিদের ব্যাটে চড়ে ৯ বল হাতে রেখেই জয়ের নাগাল পেয়ে যায় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা।
রান তাড়ায় অবশ্য শুরুতে ধাক্কা খেয়েছিল কুমিল্লা। একবারে ইনিংসের প্রথম ওভারেই হারিয়ে ফেলে সুনিল নারিনের উইকেট। তবে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতেই সেই ধাক্কা সামলে চমৎকার জুটি উপহার দেন লিটন ও তাওহিদ। এক প্রান্তে ব্যাটিং তাণ্ডব চালান তাওহিদ। অন্য প্রান্তে লিটন চড়াও হন। এই জুটিতেই জয়ের পথ সহজ করে ফেলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
১৫তম ওভারে গিয়ে থামে এই জুটি। তাওহিদকে আউট করে ১৪৩ রানের জুটি ভাঙেন আবু হায়দার। ৫ বাউন্ডারি ৪ ছক্কায় ৪৩ বলে ৬৪ রান করে ফেরেন তাওহিদ। এরপর জনসন চার্লসকে নিয়ে পাড়ি দেন লিটন। ৮৩ রানের দারুণ ইনিংস উপহার দিয়ে মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক। ৫৭ বলে যা সাজানো ৯ চার আর ৪ ছয়ে। অধিনায়ক ফেরার পর ফিনিশিং দেন মঈন ও আন্দ্রে রাসেল। ১৮.৩ ওভারে ১৮৬ রান করে মাঠ ছাড়ে গেলবারের চ্যাম্পিয়নরা।
এর আগে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচটিতে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে স্কোরবোর্ডে ১৮৫ রান তোলে রংপুর। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৯৭ রানের ইনিংসটি আসে নিশামের ব্যাট থেকে।
টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই হারায় ওপেনার শামীম হোসেনকে। তানভির ইসলামের ডেলিভারিতে আন্দ্রে রাসেলের হাতে ক্যাচ দিয়ে শূন্যতে বিদায় নেন শামীম।
রনি তালুকদারও পারেননি থিতু হতে। তৃতীয় ওভারেই উইকেটের পেছনে লিটনের হাতে ক্যাচ বানিয়ে তাকে বিদায় করেন বর্ষন। রনির ব্যাট থেকে আসে মাত্র ১১ রান। ওয়ানডাউনে নামা সাকিবকে মাঠছাড়া করেন রাসেল। ক্যারিবীয় তারকাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে বর্ষনের হাতেই ক্যাচ তুলে দেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। ২৭ রানে তিন উইকেট হারায় রংপুর, সাকিব করেন ৫রান।
দ্রুত টপ অর্ডারদের হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় রংপুর। সেখান থেকে উদ্ধার করেন নিশাম। প্রথমে শেখ মেহেদির সঙ্গে ৩৯ রানের জুটিতে লড়াই করেন। এরপর ২২ রান করে মেহেদি ফিরলে জুটি বাধেন নিকোলাস পুরানের সঙ্গে। ওই জুটিও বেশিদূর যায়নি। ঝড় তোলার আগেই পুরানকে থামান মুশফিক হাসান। ৯ বলে ১৪ রানের বেশি করতে পারেননি পুরান।
সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মিছিলে উইকেটে থিতু ছিলেন নিশাম। ৩১ বলে কিউই তারকা তুলে নেন ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি। এরপর বাকি ইনিংস তিনিই টানেন। কিউই তারকার ব্যাটে চড়েই লড়াইয়ের পুঁজি পায় রংপুর রাইডার্স। শেষ পর্যন্ত উইকেট ধরে রেখে ৯৮ রানের ইনিংস উপহার দিয়েছেন নিশাম। ৪৯ বলে যা সাজানো সাতটি ছক্কা আটটি চারে।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে বল হাতে ৪ ওভারে ৭২ রান দিয়ে এক উইকেট নেন মুশফিক হাসান। বিপিএলের ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে খরুচে বোলিং। আন্দ্রে রাসেল ৩৭ রান দিয়ে নেন দুটি। সুনিল নারিন নেন একটি করে উইকেট।