প্রথম ধাপের তুলনায় দ্বিতীয় ধাপের ভোট ‘একটু ভালো’ হয়েছে বলে মনে করছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ। তবে দ্বিতীয় ধাপের ভোটে কিছু ইউনিয়ন পরিষদের অনিয়ম ও সহিংসতায় সামগ্রিক সফলতাকে ম্লান করে দিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় ইসির মিডিয়া সেন্টারে ভোট শেষে প্রতিক্রিয়ায় এ কথা জানান সিইসি।
 
কাজী রকিব বলেন, ‘প্রথম ধাপের অভিজ্ঞতার আলোকে দ্বিতীয় ধাপে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছি। কিছু ব্যবস্থা গৃহীত হওয়ায় প্রথম ধাপের তুলনায় এবার একটু ভালো হয়েছে। তবে কয়েকটি ইউপিতে কিছু ঘটনা সামিগ্রিক অর্জনকে ম্লান করে দিয়েছে।’
 
দ্বিতীয় ধাপে ৬৩৯ ইউপিতে ভোট হয়। ভোটের সময় ও পরবর্তী সময়ে অন্তত ছয়জনের প্রাণহানি হয়েছে। অনিয়মের কারণে ৩৩টি ভোটকেন্দ্রর ভোট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান সিইসি।

এর আগে প্রথম ধাপে গত ২২ মার্চ ৭১২ ইউপিতে ভোট হয়। সেই ভোটের দিন সহিংসতায় চার জেলায় ১১ জন নিহত হয়। আহত হয় সহস্রাধিক। গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে ২৩ মার্চ পর্যন্ত সহিংসতায় মোট ২২ জনের প্রাণহানীর ঘটনা ঘটে।  
 
আজ ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলায় এক শিশু নিহতের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশের পাশাপাশি ভোলায় এনটিভির জেলা প্রতিনিধি গুলিবিদ্ধ হওয়ার জন্য দুঃখ প্রকাশ করা হয় ইসির পক্ষ থেকে।
 
অনিয়ম সহিংসতা রোধে ইসির অবস্থানের কথা তুলে ধরে কাজী রকিবউদ্দিন বলেন, ‘আমরা প্রতিটি বিষয় নিবিড় পর্যবেক্ষণ করেছি। যেখানে অনিয়ম হয়েছে ব্যবস্থা নিয়েছি। ভবিষ্যতে আরো সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হবে আশা করি।’
 
বিএনপির ভোট বর্জনের হুমকির বিষয়ে সিইসি জানান, দলটির অনেক দাবিকে তারা আমলে এনেছেন। পরবর্তী ধাপে আরো ভালো নির্বাচনের আশাও করেন তিনি।
 
বিএনপির সমালোচনার বিষয়ে কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘রাজনৈতিক দল তাদের অভিমত দেবে। যেকোনো প্রার্থী, দল তাদের মনোভাব প্রকাশ করবে। আমরা তাদের আশ্বস্ত করেছি- অনিম হলে ব্যবস্থা নেব।’
 
দ্বিতীয় ধাপের পর আরো চার ধাপে ভোট রয়েছে ইউপির। পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতির উন্নতির পাশাপাশি ভোটার উপস্থিতিও বাড়বে বলে মনে করেন সিইসি। তিনি বলেন, ‘আমরা গুণগত মান বাড়াতে চাই, আরো বাড়বে সামনে; অনিয়মকে ছাড় দেব না।’
 
ব্যাপক ভোটারের উপস্থিতি ছিল এ ধাপে। বিশেষ করে নারী ভোটারের লাইন ছিল দীর্ঘ। আগামীতেও সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে। সবাইকে স্বতস্ফূর্তভাবে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানান কাজী রকিব।
 
ভোটের সময় দুষ্কৃতকারীরা তাদের কৌশলও পাল্টে ফেলেছে বলে ধারণা করেন সিইসি।
 
এ কৌশলকে আটকাতে নিজের নজরদারির দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে কাজী রকিবউদ্দিন বলেন, ‘তারা স্ট্র্যাটেজি চেঞ্জ করে ফেলেছে। আগে-পরে না করে মাঝখানে ঘটনা ঘটাচ্ছে।’
 
এ সময় ইসির মিডিয়া সেন্টারে সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব মোখলেছুর রহমান, যুগ্ম সচিব জেসমিন টুলী উপস্থিত ছিলেন।