‘চার ছক্কা’র ব্রেথওয়েটের উচ্ছ্বাস
প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পাত্তাই দিতে চায়নি অনেকে। কেউ-কেউ তো ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করতেও ছাড়েনি। সব সমালোচনা-বিদ্রূপকে উড়িয়ে ক্যারিবীয়রা এখন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন। ফাইনালে টানা চারটি ছক্কা মেরে নাটকীয় জয় এনে দেওয়া কার্লোস ব্রেথওয়েট এই সাফল্য উৎসর্গ করেছেন পুরো ক্যারিবীয় অঞ্চলের মানুষকে।
ফাইনাল শেষে ইএসপিএন ক্যারিবিয়ানকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় আবেগ লুকিয়ে রাখতে পারেননি ব্রেথওয়েট। অনেক প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তাঁর মন্তব্য, ‘বেশির ভাগ দেশেরই হয়তো আমাদের চেয়ে বেশি সম্পদ আছে। তবে আমাদের আছে প্রকৃতিগত প্রতিভা। কেউ কেউ বলেছে, বুদ্ধির অভাবে আমরা প্রতিভার সঠিক ব্যবহার করতে পারছি না। বলা হয়েছে, মাঠের বাইরের কার্যকলাপের জন্য মাঠের ভেতরে আমাদের সাফল্যের হার কম। আমি শুধু বলতে চাই, আমরা দলের সব সদস্য মাঠের ভেতরে আর বাইরে একসঙ্গে মিলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের উন্নতিসাধনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সেটা শুধু দলের জন্য নয়, বরং ক্রিকেট আর আমাদের পুরো অঞ্চলের জন্যও।’
সাক্ষাৎকারে অবধারিতভাবে উঠে এসেছে রোমাঞ্চকর শেষ ওভারের প্রসঙ্গ। শেষ ওভার শুরু হওয়ার সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজ জয় থেকে ১৯ রান দূরে দাঁড়িয়েছিল। একে তো ফাইনাল ম্যাচ, তার ওপরে ছয় বলে ১৯ রানের কঠিন লক্ষ্য। ক্যারিবীয়দের নিয়ে তাই বাজি ধরার লোক কমই ছিল তখন। কিন্তু সবাইকে বিস্ময়াভিভূত করে বেন স্টোকসকে টানা চারটি ছক্কা মেরে ব্রেথওয়েট অবিস্মরণীয় জয় উপহার দিয়েছেন দলকে। শেষ ওভারের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে ক্যারিবীয়দের জয়ের নায়ক বলেছেন, ‘সত্যি বলতে কি, সেই সময় কিছুটা স্নায়ুর চাপে ভুগছিলাম। আমি শুধু মনোযোগ ধরে রেখে মারলনকে (স্যামুয়েলস) চাপমুক্ত রাখার চেষ্টা করেছি। এক রান নিয়ে তার কাছ থেকে সবকিছু পাওয়ার আশা করলে হয়তো অন্যায়ই হতো। আমি শুধু চেষ্টা করেছি একাধিক বাউন্ডারি মারতে। সৌভাগ্যক্রমে তা করতেও পেরেছি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মানুষকে সাফল্য এনে দিতে পেরেছি বলে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।’
ক্যারিবীয়দের শিরোপা-উৎসবে মাতিয়ে তোলার জন্য নিজের ব্যাটের নির্মাতাকে ধন্যবাদ জানাতেও ভোলেননি ২৭ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার, “আমার গ্রাম, পরিবার, বন্ধুদের প্রত্যেককে বিশেষভাবে ধন্যবাদ দিতে চাই। বিশেষ করে ক্যারিবিয়ানের দুর্দান্ত ব্যাট-নির্মাতা মিস্টার এরল এডিকে। তিনি বিশ্বকাপে ব্যবহারের জন্য এই বিশেষ সুন্দর ব্যাটটি আমাকে তৈরি করে দিয়েছেন। আসার আগে তিনি বলেছিলেন, ‘কার্লোস, যাও আর সবাইকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে এসো।’ এরল, আমি করেছি। এখন আমরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন।”