সাংকেতিক নাম ব্যবহার করে নারী পাচার, গ্রেপ্তার ৫
ভারতে পাচারের সময় ভুক্তভোগী তিন নারীকে উদ্ধার ও পাচারকারীদের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় গ্রেপ্তার আসামির মোবাইলফোনে কল আসে। লাউড স্পিকার দিয়ে ফোন রিসিভ করা হয়। পুলিশ শুনতে পায় কথোপকথনের শুরুতেই অপরপ্রান্ত থেকে জানতে চাওয়া হয়, ‘কাপড়’ আছে কয়টা? দুই প্রান্তের কথোপকথনে বোঝা গেলো, ‘কাপড়’ শব্দটি একটি সাংকেতিক নাম। পাচারকারীদের কাছে এই শব্দের অর্থ হচ্ছে তরুণী বা নারী।
আজ বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকেলে সাভারের হেমায়েতপুর ভরারী নতুনপাড়ায় অভিযান চালিয়ে চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন—মাদারীপুর শিবচরের গুয়াতলা এলাকার খলিল বেপারী (৪২), একই এলাকার লাইলী বেগম (৩৫), টাঙ্গাইল কালিহাতির সিংগাইর এলাকার মো. নজরুল ইসলাম (৩৯), সাভার জোরপুলের ভড়ারী বটতলা এলাকার মিথিলা আক্তার (২০) ও বরিশাল উজিরপুরের ডাকুয়া এলাকার তানজিলা আক্তার ফাতেমা (২৫)।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে পুলিশ জানায়, উদ্ধার করা নারীদের লোভনীয় চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে পাচার এবং পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করার বিষয়টি স্বীকার করেছে আসামিরা।
সাভারের আমিনবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) মো. হারুন অর রশিদ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই এলাকার পোড়া বাবুলের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। বাড়ির দোতলার একটি কক্ষ থেকে জড়িতদের আটক করা হয়। পরে মানিকগঞ্জের মোছা. নাদিয়া আক্তার (১৪), ফরিদপুর চরভদ্রাসনের মোছা. আলেয়া আক্তার (২২) ও ঝিনাইদহের শৈলকুপার সুমাইয়া আক্তার সাথীকে (১৯) উদ্ধার করা হয়।
এস আই হারুন জানান, গ্রেপ্তারদের মোবাইলফোন ঘেঁটে অসংখ্য তরুণীর ছবি পাওয়া গেছে। তাদের ফোনকল চেক করে দেখা হচ্ছে। আর্থিক দৈন্যতা ছাড়াও অসহায় নারীদের টার্গেট করত চক্রটি। চক্রের নারী সদস্যরা বিভিন্ন স্থান থেকে ভুক্তভোগীদের সংগ্রহ করে তুলে দিতেন পুরুষ সদস্যদের হাতে। পরে সাভারের ওই বাড়িতে জড়ো করা হতো ভুক্তভোগীদের। সুযোগ মতো তাদের পাচার করা হতো বিভিন্ন পতিতা পল্লিসহ দেশের বাইরে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন পতিতালয়েও নিয়মিত পাঠানো হতো তাদের।
গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় মানবপাচার আইনে মামলা করা হয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।