হাজারীবাগে থাকা ট্যানারির তালিকা তলব হাইকোর্টের
রাজধানীর হাজারীবাগে যেসব ট্যানারি এখনো কার্যক্রম পরিচালনা করছে, সেগুলোর তালিকা তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে শিল্পসচিবকে এই তালিকা দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার বিচারপতি সৈয়দ মোহম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম সাহিদুল হকের ডিভিশন বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
হাইকোর্টের রায় অমান্য করে অনেক ট্যানারি সাভারে না গিয়ে হাজারীবাগে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করছে—এমন দাবি করে আদালতে আবেদন দাখিল করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। আবেদনের পক্ষে রিটকারী নিজেই শুনানি করেন। শুনানি শেষে হাইকোর্ট উল্লিখিত আদেশ দেন।
এর আগে ট্যানারি স্থানান্তরে আদালতের নির্দেশ অমান্য করায় ১০টি প্রতিষ্ঠানকে তলব করেন হাইকোর্ট। পরে গত ১০ এপ্রিল তিন ট্যানারি মালিককে পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়। আরো তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। পুলিশে পাঠানোর পর প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে আদালত অবমাননার দায় থেকে মুক্তি পান তিন ট্যানারি মালিক। তাঁরা হলেন—পূবালী ট্যানারিজের মাহবুবুর রহমান, রুমি লেদার ইন্ডাস্ট্রিজের গিয়াস উদ্দিন আহমেদ পাঠান ও মেসার্স প্যারামাউন্ট ট্যানারিজের মো. আকবর হোসেন।
এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০১ সালে ট্যানারি শিল্প হাজারীবাগ থেকে সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। দীর্ঘদিন ধরে ওই আদেশ বাস্তবায়িত না হওয়ায় অন্য এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হাজারীবাগের ট্যানারি শিল্প অন্যত্র সরিয়ে নিতে ২০০৯ সালের ২৩ জুন হাইকোর্ট ফের নির্দেশ দেন।
সরকারপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পরে ওই সময়সীমা কয়েক দফা বাড়িয়ে ২০১১ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু এ সময়ের মধ্যেও স্থানান্তর না হওয়ায় পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আদালত অবমাননার মামলা করেন মনজিল মোরসেদ।
এ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ১৫ এপ্রিল আদালত অবমাননার রুল জারি করেন হাইকোর্ট। পরে গত বছরের ২১ এপ্রিল আদালতের তলবে হাইকোর্টে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন শিল্পসচিব। এরপরও ওই দশ প্রতিষ্ঠান হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি স্থানান্তরের পদক্ষেপ না নেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ফের আদালত অবমাননার অভিযোগে আরো একটি আবেদন করেন মনজিল মোরসেদ।
এ আবেদনের শুনানি নিয়ে গত বছরের ১১ আগস্ট হাইকোর্ট ১০ কারখানা মালিকের বিরুদ্ধে রুল জারি করেন। এ রুলের পর ১০ মালিককে তলব করে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে ২১ মার্চ আবেদন করেন মনজিল মোরসেদ। ২৩ মার্চ এ আবেদনের শুনানি শেষে ব্যাখ্যা দিতে আদালত ১০ মালিককে ১০ এপ্রিল তলব করেন।