শরীয়তপুরে বাড়ছে সাপের উপদ্রব, আতঙ্কে এলাকাবাসী
নদী বেষ্টিত শরীয়তপুর জেলায় বিভিন্ন জাতের সাপের উপদ্রব বাড়ছে। বিষাক্ত সাপের কামড়ে ঘটছে প্রাণহানির ঘটনাও। তবে এখনো সাপে কাটা রোগীদের প্রথম ভরসা ওঝা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সদর হাসপাতালে অ্যান্টিভেনম থাকলেও প্রচার না থাকায় সেবা নিতে জেলার বাইরে চলে যাচ্ছেন অনেকেই। এতে সময়ের কালক্ষেপণে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ছে। অথচ স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে আসলেই মিলবে চিকিৎসা, রয়েছে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম।
পদ্মা-মেঘনা বেষ্টিত শরীয়তপুরের একটি বড় অংশের মানুষের বসবাস চরাঞ্চলে। জেলা জাজিরা, নড়িয়া, ভেদরগঞ্জ ও গোসাইরহাট উপজেলার একটি বড় অংশই চরাঞ্চল। নদীর পার জুরে গড়ে উঠেছে জনবসতি। জেলার এক তৃতীয়াংশ লোকের বসবাস চরাঞ্চলে। চরের জমিতে ফসলের আবাদ, গবাদিপশু পালন ও নদীতে মাছ ধরাই অধিকাংশ মানুষের পেশা। বর্ষা মৌশুম এলে নদীর পার তলিয়ে যায় জোয়ারের পানিতে।
জীবিকার টানে চরাঞ্চলের মানুষকে ছুটতে মাঠেঘাটে। তবে এসব এলাকায় সম্প্রতি বিভিন্ন জাতের সাপের উপদ্রব বেড়ে গেছে। দেখা মিলছে ভয়ঙ্কর সাপ রাসেল ভাইপারেরও। সম্প্রতি সাপের কামড়ের শিকার হয়েছেন শতাধিক মানুষ। এদের মধ্যে মারা গেছে দুইজন। সাপ আতঙ্কে দিন কাটছে চরাঞ্চলের মানুষের। ভয়ে অনেকে ফসলের মাঠে কাজ করতে যাওয়াও ছেড়ে দিয়েছেন।
নদী বেষ্টিত এলাকা হওয়ায় শরীয়তপুরে প্রতি বছরই বর্ষার মৌসুমে বাড়ে সাপের উপদ্রব। সবচেয়ে বেশি সাপের কামড়ের শিকার হচ্ছেন ভেদরগঞ্জ উপজেলার মানুষ। বিভিন্ন জায়গা থেকে উদ্ধার হচ্ছে সাপ ও সাপের ডিম। এ নিয়ে আতঙ্কিত এলাকার মানুষ।
এই এলাকার মানুষের কাছে এক মাত্র ভরসা এখন মিজানুর রহমান ঢালী ওরফে মিনু ওঝা। প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে সাপে কাটার খবর আসে মিনু ওঝার কাছে। মিনু ওঝাও ছুটে জান সাপ উদ্ধার করতে। রপ্ত করা আপন কৌশলে সাপ ধরে নিয়ে আসেন তিনি। ৩৬ বছর ধরে সাপ ধরা ও ঝাড়ফুঁকের কাজ করছেন মিনু ওঝা। বেশম কিছু সাপ রয়েছে তার সংরক্ষণে। এর মধ্যে তিনটি রাসেল ভাইপারও উদ্ধার করেছেন তিনি।
এদিকে, লোকজনকে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হয়ে চলাচলের পরামর্শ দিয়েছেন জেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। কাউকে সাপে ছোবল দিলে দ্রুত নিকটতম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সব কটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই এন্টিভেনম রয়েছে, পাশাপাশি রয়েছে দক্ষ চিকিৎসক। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন দ্রুত চিকিৎসা দিতে পারলে রাসেল ভাইপার সাপের কামড়ে আক্রান্ত ব্যক্তিকেও প্রাণে বাঁচানো সম্ভব।