প্রশ্নপত্র ফাঁসের সময় গোয়েন্দা বিভাগের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন রিজভীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘যখন ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়, তখন কি আপনার গোয়েন্দা বিভাগ ঘুমিয়ে থাকে? তাদের কি শুধু বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে গ্রেপ্তার করার জন্যই তৈরি করেছেন?’
আজ বুধবার (১০ জুলাই) রাজধানীর রামপুরায় বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দল আয়োজিত দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন রিজভী।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে ডামি সরকারের প্রধানমন্ত্রী গোটা জাতিকে একটা ইস্যু প্রেমি বানানোর চেষ্টা করছে। যার কারণে একেক সময় একেক ঘটনা ঘটাচ্ছে সরকার। অর্থাৎ, তুমি ঐ দিকে তাকাও আমি যা করছি, সেদিকে তাকাবে না।’
রিজভী বলেন, ‘বেনজীর-আজিজসহ অন্যান্য উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা যে হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি করেছে, প্রধানমন্ত্রী কি এগুলো দেখেন না? তখন আপনার এজেন্সি, গোয়েন্দা বাহিনী কি করে? তারা কি দেখে না? তাদের কি শুধু ইলিয়াস আলী, সাইফুল ইসলাম হিরু, যুবদলনেতা সুমনকে গুম করার জন্য রাখা হয়েছে? যদি তা না হয়, তাহলে একজন পিয়ন কী করে ৬০ কোটি টাকার মালিক হয়? একজন ড্রাইভার কীভাবে ১০০ কোটি টাকার মালিক হয়? সেটা কি আপনার সরকার জানবে না?’
‘যখন বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্র, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়, তখন কি আপনার গোয়েন্দা বিভাগ ঘুমিয়ে থাকে? তারা কি দিনের বেলায় ঘুমান? তা না হলে এত দুর্নীতি হয় কী করে’, জানতে চান রিজভী।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের বুক চিরে পার্শ্ববর্তী দেশ রেললাইন নিয়ে যাবে। আমাদের সার্বভৌমত্বকে দুর্বল করার জন্য এই কাজগুলো করা হচ্ছে। অথচ আমাদের সীমান্তে যখন এদেশের নাগরিকদেরকে হত্যা করা হয়, তখন এই সরকার কোনো প্রতিবাদ করে না। অথচ, সেই দেশের রেললাইন তাদের স্বার্থে আমাদের দেশের ভেতর দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশ নিজেদের রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করতে চাচ্ছে। বাংলাদেশকে একটা চিরস্থায়ী আন্তর্জাতিক চক্রান্ত, আন্তর্জাতিক খেলাধুলার মধ্যে ফেলে দেওয়ার একটা প্রচেষ্টা তারা হাতে নিয়েছে। যার কারণে আমরা দেখতে পাচ্ছি, সরকার নিজেদের অপকর্ম ঢাকার জন্য, দেশবিরোধী সব চুক্তিকে আড়াল করার জন্য জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে দিচ্ছেন। তাই আমরা আজিজ কাণ্ড, বেনজীর কাণ্ড, পিএসসির ড্রাইভার কাণ্ডসহ নানান কাণ্ড সরকার ঘটিয়ে যাচ্ছে।’
রিজভী আরও বলেন, ‘ডামি সরকারের দখলদার প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন কলাকৌশলে জিয়া পরিবার এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে হেয় করেও জনগনের মন থেকে মুছে ফেলতে পারেনি। এখন নতুন করে খালেদা জিয়াকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছেন। যে নেত্রী কখনো কোনো স্বৈরাচারের কাছে আপস করেননি, তার জনপ্রিয়তাই একজন ব্যক্তির হিংসার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপিনেতা রিজভী বলেন, ‘তারা (সরকার) আক্রমণ করবে, বন্দি করবে, মামলা দেবে, ক্রসফায়ার করবে, গুম করবে। এসব নির্যাতনের পরও আমরা সত্যের জন্য, মানুষের মুক্তি ও স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বের জন্য লড়াই চালিয়ে যাব।’
মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিমের পরিচালনায় আয়োজিত দোয়া অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ-অর্থনৈতিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি ডা. জাহিদুল কবির, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহসভাপতি তৌহিদুর রহমান আউয়াল, বিএনপিনেতা ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল, সিরাজ হোসেন, ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি তারেক উজ জামান তারেক, ছাত্রদল নেতা সাহাবুদ্দিন ইমন, মো. সাব্বির, ডা. পিয়াস, শাহ পরান, মিরাজ হোসেন, আশরাফুল আসাদ, মৎস্যজীবী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেন খান, ওমর ফারুক পাটোয়ারী ও জাহাঙ্গীর আলম সনিসহ আরও অনেকে।