মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তি হয়েও এখন সে কোটার বিরুদ্ধে সোচ্চার : প্রধানমন্ত্রী
সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা সংস্কারের দাবিতে গড়ে তোলা আন্দোলনের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিচিত্র এ দেশ, বিচিত্র এ দেশের মানুষের মন। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে সেও এখন কোটার বিরুদ্ধে সোচ্চার।
আন্দোলনকারীদের প্রতি প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার প্রশ্ন- মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা চাকরি পাবে না তো কী রাজাকারের নাতিপুতিরা পাবে? মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কথা বলার অধিকার তাদের কে দিয়েছে?
প্রধানমন্ত্রী আজ রোববার (১৪ জুলাই) তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। তার সদ্যসমাপ্ত চীন সফর নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম ও ড. আবদুর রাজ্জাক, অর্থমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলন পরিচালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান।
কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের মেধার বিষয়ে প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘যারা আন্দোলন করছে তারা আইন, আদালত ও সংবিধান কিছুই মানছে না। আদালতে তারা যাক, তাদের কথা বলুক। সত্যিকার অর্থে আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে আমার যাওয়ার অধিকার নেই। তারা কিছুই মানছে না। তাদের তো আদালতে গিয়ে তাদের বক্তব্য দেওয়ার কথা।
শেখ হাসিনা বলেন, একবার কোটাবিরোধীরা আন্দোলন করে এমন ঘটনা ঘটালো, ঘরে বসে কেউ কেউ মিথ্যাচার করা শুরু করে। একটা পর্যায়ে আমি কোটাই বাতিল করে দিলাম। তারপর কী অবস্থা হলো? তা সবাই জানেন। আমিই নারী থেকে সচিব করি। ডিসি, এসপি ও ওসি পর্যন্ত আমি নিযোগ দেই। নারীদের আমিই পার্লামেন্টে আলাদা আসন রাখার ব্যবস্থা করি। সেই সময় অনেক নারিও আন্দোলন করে। আন্দোলন করে তারা কী পেলো? আমাদের দেশে অনেকগুলো জেলা অনুন্নত রয়েছে। তাদের জন্য তো কোটা দরকার।
মুক্তিযোদ্ধারা নিজের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে। তাদের প্রতি এত ক্ষোভ কেনো? মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীন না করলে পাকিস্তানি মিলিটারিদের বুটের লাথি খেতে হতো।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে দেশের অবস্থা কী ছিলো। বিচিত্র এ দেশ বিচিত্র এ দেশের মানুষ। ছয় ঋতুর এ দেশ, ছয় ঋতুর সাথে মানুষের মনও বদলায়।
মুক্তিযোদ্ধার নাতি কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি হয়ে এখন সেও কোটা বাতিল চায়। আমার প্রশ্ন- তুমি যদি কোটা নাই চাও তাহলে আগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হয়ে তারপর কথা বলো। মুক্তিযোদ্ধার বাচ্চারা মেধাবীরা না রাজাকারের বাচ্চারাই মেধাবী। তারা তো পরাজিত। তাহলে তাদের মেধা কোথায়? এটাই আমার প্রশ্ন।