পালানোর সময় বিচারপতি মানিকের ৭০ লাখ টাকা কারা নিলো?
সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ভারতের পালিয়ে যাচ্ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আলোচিত ও সমালোচিত অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। এসময় তাকে আটক করে বিজিবির হাতে তুলে দেয় স্থানীয় জনতা। পালিয়ে যাওয়ার সময় নগদ ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা, ব্রিটিশ পাসপোর্টসহ ব্যক্তিগত বিভিন্ন সামগ্রী সঙ্গে নিয়ে যান সাবেক বিচারপতি মানিক। কিন্তু পথিমধ্যে সব কিছুই তার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
ভারতে পালানোর সময় এই বিচারপতির একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এরইমধ্যে ভিডিওটি ভাইরালও হয়েছে।
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, কী কী নিয়ে পালাচ্ছিলেন- এমন প্রশ্নের জবাবে বিচারপতি মানিক বলেন, ‘আমার সঙ্গে ছিল ব্রিটিশ পাসপোর্ট, বাংলা পাসপোর্ট, নগদ কিছু টাকা, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড।’
একজন জানতে চান, ‘আজকে আটকের সময় আপনার সঙ্গে কী ছিল?’ জবাবে এই সাবেক বিচারপতি জানান, ‘তেমন কিছু ছিল না। চল্লিশ হাজারের মতো টাকা ছিল। গতকাল ৬০ থেকে ৭০ লাখের মতো টাকা ছিল। ওটা নিয়ে গেছে।’
কারা টাকা নিয়ে গেছে জানতে চাইলে বিচারপতি মানিক বলেন, যাদের সঙ্গে তিনি পালিয়ে যাওয়ার চুক্তি করেছিলেন, তারাই সব কেড়ে নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে। নৌকাওয়ালা নিয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেগুলো ওই দুই ছোকরাই নিয়েছে। আমার সঙ্গে কিচ্ছু নাই, ফোন-ফোন নম্বর সব নিয়ে গেছে।’
আলোচিত সাবেক এই বিচারপতি আরও বলেন, ‘আমি ১৫ হাজার টাকা চুক্তিতে আসছিলাম, ওই টাকা আমি তাদের দিয়েছি। কিন্তু পরে ওই দুই ছেলে আমাকে মারধর করে সব নিয়ে গেছে।’
বিচারপতি মানিক নানা বিতর্কিত মন্তব্য ও কর্মকাণ্ডের কারণে আলোচিত-সমালোচিত। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগের দিন একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের টকশোতে উপস্থাপিকার সঙ্গে অত্যন্ত বাজে আচরণ করে তিনি ব্যাপক আলোচনায় আসেন। পরে তিনি ওই উপস্থাপিকার কাছে লিখিত ক্ষমা চান।
সম্প্রতি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় বিচারপতি মানিকের নামে নোয়াখালীর আদালতে মামলা হয়েছে। কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রবিউল হাসান পলাশ বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ নম্বর আমলি আদালতে মামলাটি করেন।
একই অভিযোগে বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলামের আদালতে আইনজীবী মো. জিয়াউল হক বাদী হয়ে আরেকটি মামলার আবেদন করেন। আদালত অভিযোগটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।