সম্প্রচার চালু হওয়ায় সময় টিভি নিয়ে আপিল আবেদন নিষ্পত্তি
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সময় টিভি সম্প্রচারে চলে আসায় তা সাত দিনের জন্য বন্ধের আদেশ স্থগিত চেয়ে করা আবেদন নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আবেদনটি অকার্যকর হয়ে যাওয়ায় আজ রোববার (১ সেপ্টেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
আদালতে সময় টিভির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ জোবায়েরের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন। তাকে সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার সাকিব মাহবুব। অন্যদিকে সময় মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম।
পরে আইনজীবীরা জানান, সময় টিভি এরইমধ্যে সম্প্রচারে চলে এসেছে। এ কারণে আবেদনের কোনো কার্যকারিতা নেই। তাই আদালত আবেদনটি নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন। এর আগে টেলিভিশন চ্যানেলটির সম্প্রচার সাতদিনের জন্য বন্ধ রাখতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে করা আপিল আবেদনের ওপর শুনানি ও আদেশের জন্য আগামী ২৭ আগস্ট ঠিক করা হয়। পরে তা ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মূলতবি করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় আজ সেটি শুনানিতে ওঠে।
শম্পা রহমানের করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে গত ১৯ আগস্ট হাইকোর্টের বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ সময় টিভির সম্প্রচার সাতদিনের জন্য বন্ধের আদেশ দেন। এরপর ২০ আগস্ট সময় টিভির সম্প্রচার সাতদিনের জন্য বন্ধের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়। সময় টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ জোবায়ের এ আবেদন করেন। তারই ধারাবাহিকতায় বিষয়টি শুনানি হয়।
গত ১০ আগস্ট গুলশানের সিটি হাউজে সময় মিডিয়া লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের সভায় নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক নির্ধারণ করা হয়। এতে বলা হয়, সভায় পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সময় টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীর পদ থেকে আহমেদ জোবায়েরকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, একই সভায় পরিচালক শম্পা রহমানকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সময় মিডিয়া লিমিটেডের সব কার্যক্রম এখন থেকে নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নির্দেশনায় পরিচালিত হবে। পরে এ অব্যাহতির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের কোম্পানি বেঞ্চে আরেকটি আবেদন করেন আহমেদ জোবায়ের। এই আবেদনের শুনানিতে আদালতে সিটি গ্রুপের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করীম। আহমেদ জোবায়েরের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।
২০০৯ সালে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা সময় টেলিভিশন পরীক্ষামূলক সম্প্রচার শেষে ২০১১ সালের ১৭ এপ্রিল বাণিজ্যিক সম্প্রচারে আসে। লাইসেন্স নেওয়ার সময় তৎকালীন মন্ত্রী কামরুল ইসলামের ভাগ্নে আহমেদ জোবায়েরের নামে ৯৩ শতাংশ শেয়ার ছিল। ব্যবসায়িক ও পারিবারিক সূত্রের তথ্যমতে, ৯০ শতাংশ শেয়ার কামরুল ইসলামের হলেও কাগজে-কলমে তা ছিল আহমেদ জোবায়েরের নামে। অন্য অংশীদারদের মধ্যে কামরুল ইসলামের ভাই মোরশেদুল ইসলামের ৩ শতাংশ এবং নিয়াজ মোরশেদ ও তুষার আবদুল্লাহর ২ শতাংশ করে শেয়ার ছিল। এরপর দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়ী গোষ্ঠী সিটি গ্রুপ সময় টেলিভিশনে ৬৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে। তাদের কাছে ৭৫ শতাংশ শেয়ার ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে ব্যবস্থাপনার নিয়ন্ত্রণ জোবায়েরের মাধ্যমে সাবেক মন্ত্রী কামরুলের পরিবারের কাছে থেকে যায়। পরে তুষার আবদুল্লাহ সময় টিভি ছেড়ে যান।