মিরাজ-জাকেরের দৃঢ়তায় স্বস্তি নিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে বাংলাদেশ
দিনের শুরুটা হয়েছিল চরম হতাশায়। প্রথম ৩০ মিনিটের মধ্যেই নেই তিন অভিজ্ঞ ব্যাটার। চোখ রাঙাচ্ছিল ইনিংস পরাজয়। সেখান থেকে দলকে উদ্ধার করেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও জাকের আলি অনিক। চাপ সামলে দুজন মিলে উপহার দেন চমৎকার জুটি। দুজনের দৃঢ়তায় প্রোটিয়াদের রানের চাপ সামলে ঢাকা টেস্টে লড়াইয়ে ফিরল বাংলাদেশ।
আজ বুধবার ঢাকা টেস্টের প্রথম সেশনে দক্ষিণ আফ্রিকার লিড টপকে যাওয়ার কাছাকাছি চলে গেল বাংলাদেশ। প্রোটিয়াদের লিড টপকাতে বাংলাদেশের দরকার স্রেফ দুই রান।
এরপর উইকেটে সেট হওয়া মিরাজ ও জাকেরের চ্যালেঞ্জ দলীয় সংগ্রহ বড় করা। এরই মধ্যে আরেকটি টেস্ট নবম ফিফটি তুলে নিয়েছেন মিরাজ। হাফসেঞ্চুরি করতে মিরাজ খেলেছেন ৯৪ বল। ৫০ ছাপিয়ে ছুটছেন তিনি। সঙ্গে সাপোর্ট দিচ্ছেন জাকের আলি। দুই ব্যাটারের দায়িত্বশীলতায় প্রথম সেশন পার করল বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের দিন শুরু উইকেট হারানোর মহড়ায়
আগের দিন উইকেটে থিতু হয়ে কিছুটা আশা দেখিয়েছেন মাহমুদুল হাসান জয় ও মুশফিকুর রহিম। দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে লড়াইয়ের প্রত্যাশা নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করে বাংলাদেশ। কিন্তু আজ বুধবার দিনের শুরুটা হলো উইকেট হারানোর মহড়ায়।
আগের দিনের জুটি আজ খেলা শুরুর ১৩ মিনিটেই ভেঙে গেল। কাগিসো রাবাদার বলে জয় ৪০ রানে বিদায় নিলে ভাঙে জুটি। একই বোলারের ফাঁদে পড়েন মুশফিকও। তার প্রতিরোধ ভাঙে ৩৩ রানে। এরপর ক্রিজে এসে হতাশ করেন লিটন দাস। ১৫ বলে ৭ রান করে কেশভ মাহারাজের বলে বিদায় নেন তিনি।
লড়াইয়ে টিকে থাকার আশায় তৃতীয় দিন শুরু বাংলাদেশের
মনে ছিল ২০২ রানের লিড। সেই সঙ্গে প্রথম ইনিংসে দ্রুত গুঁড়িয়ে যাওযার চাপ তো ছিলই। দুই চাপের মধ্যে দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুটাও বিবর্ণ হয় বাংলাদেশের। তবে, শেষ বিকেলে বাংলাদেশের বিপদ বাড়তে দেননি মাহমুদুল হাসান জয় ও মুশফিকুর রহিম। দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটি নিয়ে আজ বুধবার (২৩ অক্টোবর) ঢাকা টেস্টের তৃতীয় দিন শুরু করেছে বাংলাদেশ।গতকাল দ্বিতীয় দিন ৪২ রানের জুটিতে বাংলাদেশের দলীয় সংগ্রহ ছাড়ায় ১০০ রান। আলোকস্বল্পতার কারণে একটু আগেই শেষ করা হয় দ্বিতীয় দিনের খেলা। দিন শেষে কাল জয় ৩৮ ও মুশফিক ৩১ রানে অপরাজিত আছেন।
মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে গতকাল মঙ্গলবার নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস বাংলাদেশ শেষ করেছে ২৭.১ ওভারে তিন উইকেটে ১০১ রানে। প্রোটিয়াদের চেয়ে ১০১ রান পিছিয়ে আজ তৃতীয় দিন শুরু করেছে বাংলাদেশ।
প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ ব্যাটাররা দ্বিতীয় ইনিংসেও নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি। দক্ষিণ আফ্রিকার চেয়ে ২০২ রানে পিছিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে বাংলাদেশ। চার রান তুলতেই নেই দুই উইকেট। সাদমান ইসলাম ১ এবং মুমিনুল হক বিদায় নেন রানের খাতা খোলার আগেই। সাদমান ও মুমনিুল দুজনকেই সাজঘরের পথ দেখান কাগিসো রাবাদা।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত মিলে চেষ্টা করেন বিপদ সামাল দেওয়ার। জুটিতে আসে ৫৫ রান। তবে, ব্যাট হাতে আলো জ্বালাতে ব্যর্থ শান্ত। ২৩ রান করে কেশব মহারাজের বলে লেগবিফোরের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক। ৫৯ রানে তিন উইকেট হারিয়ে দল আরও বিপদে পড়ে। শেষ পর্যন্ত তা সামাল দেন জয় ও মুশফিক জুটি।
বোলিংয়ে ইনিংসটা ঠিকঠাকই শুরু করেছিল বাংলাদেশ। ঢাকা টেস্টের প্রথম দিনে ছয় উইকেট তুলে নিয়ে কিছুটা অস্বস্তিতে ফেলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকাকে। কিন্তু দ্বিতীয় দিনের লড়াইয়ে বোলিংয়ের সেই ছন্দ মোটেই ধরে রাখতে পারল না বাংলাদেশ। বরং উইকেটে হুঙ্কার তুলে সেঞ্চুরি তুলে নেন কাইল ভারানে। তার দায়িত্বশীলতার ভর করে প্রথম ইনিংসে তিনশ ছাড়ানো সংগ্রহ পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
ঢাকা টেস্টে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৩০৮ রানে থেমেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তার আগে এই টেস্টের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশকে মাত্র ১০৬ রানে অলআউট করে দক্ষিণ আফ্রিকা।