ক্যারিবীয়দের দেয়াল ভেঙে প্রথম দিনের ইতি টানল বাংলাদেশ
দিনের প্রথম সেশনের পুরোটা নিজেদের রঙে রাঙায় বাংলাদেশ। কিন্তু সময় গড়াতেই বাংলাদেশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ান দুই ক্যারিবিয়ান ব্যাটার মিকাইল লুই ও আলিক আথেনেজ। জুটি গড়ে দুজনের ছুটতে থাকেন শতকের পথে। কিন্তু দুজনের কারও প্রত্যাশা পূরণ হতে দেয়নি বাংলাদেশ। দিনের শেষভাগে নার্ভাস নাইন্টিতে দুজনকে মাঠ ছাড়া করে প্রথম দিনের ইতি টেনেছে বাংলাদেশ।
অ্যান্টিগা টেস্টের প্রথম দিনের পুরোটা ব্যাটিং করে ৫ উইকেটে স্কোরবোর্ডে ২৫০ রান তুলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দিন শেষে উইকেটে ১৪ রানে অপরাজিত জশুয়া ডি সিলভা। তার সঙ্গে ১১ রানে আছেন জাস্টিন গ্রিভস।
দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে টস জিতে বোলিং বেছে নেয় বাংলাদেশ। প্রথম ঘণ্টায় উইকেটের সুবিধা নিতে মূলত এই সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রথম সেশনের বোলিংটাও হয় প্রত্যাশামতো। কিন্তু, সময়ের সঙ্গে সেই প্রত্যাশার প্রাপ্তি ক্রমেই মিলিয়ে যায়।
অ্যান্টিগায় আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে অবশ্য বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ইনিংসের প্রথম ওভার মেডিন দিয়ে শুরু করেন হাসান মাহমুদ। নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন তাসকিন-শরফুলও। তিন পেসার মিলে রান কম দিলেও কোনো উইকেটের দেখা পাননি।
উইকেটের দেখা মেলে দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে। ক্যারিবীয়দের ওপেনিং জুটি ভাঙেন তাসকিন। দারুণ এক ডেলিভারিতে ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটকে মাঠছাড়া করেন তিনি। দলীয় ২৫ রানে প্রথম উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৩৮ বলে ৪ রান করেন ব্র্যাথওয়েট। ক্যারিবীয় ওপেনারের পর ওয়ানডাউনে নামা কার্টিসকেও বিদায় করেন তাসকিন।
মোট দুই উইকেট হারিয়ে প্রথম সেশনে ২৩ ওভার ক্যারিবিয়ানদের স্কোরবোর্ডে আসে ৫০ রান। এই সেশনটা মোটামুটি বাংলাদেশেরই দাপট থাকে।
কিন্তু দ্বিতীয় সেশনে সেই দাপট হাওয়ায় মিলিয়ে যায়। চা বিরতিতে যাওয়ার আগে মাত্র একটি উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেটাও যায় রান আউটে কাটা পড়ে। এই সেশনেও মূলত জুটি পেয়ে যায় স্বাগতিকরা। পেরিয়ে যায় দলীয় শতরান।
প্রথমে কেভিম হজ পরে আলিক আথনেজের সঙ্গে শক্তি জুটি গড়েন মিকাইল লুই। বিশেষ করে লুই ও আলিক মিলে স্বাগতিকদের নিয়ে যান শক্ত অবস্থানে। মাঝে হজ ২৫ রান করে ফিরলেও বাকি দুজন এগিয়ে যান সেঞ্চুরির পথে।
যদিও দুজনের একজনকেও সেঞ্চুরি স্পর্শ করতে দেয়নি বাংলাদেশের বোলাররা। ব্যক্তিগত ৯৭ রানে লুইকে থামান মিরাজ। বাংলাদেশ অধিনায়কের বল ছক্কায় ওড়াতে গিয়ে টাইমিং গড়বড় করেন লুই। ব্যাটের কানায় লেগে বল চলে যায় স্লিপেম ক্যাচ নিয়ে সুযোগ হাতছাড়া করেননি ফিল্ডার শাহাদাত।
২১৮ বল খেলে শেষ পর্যন্ত ৯৭ রানে থামেন লুই। তার বিদায়ে ভাঙে ১৪০ রানের শক্ত জুটি। লুইয়ের পর নার্ভাস নাইন্টিতে ফেরেন আলিকও। তিনিও পা দেন স্পিনের ফাঁদে। তাইজুলের স্পিনে স্কিপ করতে গিয়ে লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন আলিক। ফলে ১৩০ বলে ৯০ রানে শেষ হয় তার ইনিংস। দুই সেট ব্যাটার ফেরার পর জশুয়া ডি সিলভা ও জাস্টিনের ব্যাটে দিনের বাকি সময় পার করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ৪৬ রান দিয়ে প্রথম দিনে সর্বোচ্চ দুটি উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ। মিরাজ ও তাইজুলের শিকার একটি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৮৪ ওভারে ২৫০/৫ (ব্র্যাথওয়েট ৪, লুই ৯৭, কার্টিস ০, হজ ২৫, আথানেজ ৯০, গ্রিভস ১১*, ডা সিলভা ১৪*; হাসান ১৮-৩-৫৪-০, শরিফুল ১৩-৪-২৭-০, তাসকিন ১৫-২-৪৬-২, তাইজুল ২২-৪-৬৭-১, মিরাজ ১৬-২-৪৭-১)।