বেশি পেঁপে খেলে শরীরে কী প্রভাব পড়বে?
পেঁপে এমন একটি পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার, যা কাঁচা ও পাকা দুই অবস্থাতেই খাওয়া যায়। কাঁচা পেপে আমরা সালাদ হিসেবেও খাওয়া যায়। এজন্য সুষম খাবারের মধ্যে পেঁপে খাওয়ার পরামর্শ পুষ্টিবিদরা দেন। কাঁচা হোক বা পাকা— পেঁপের পুষ্টিগুণ অনেক। শিশু ও বয়স্কদেরও পেঁপে খাওয়া ভাল। কিন্তু কথা হলো, পেঁপে খেলেই হলো না, তা সময় ধরে ও নির্দিষ্ট পরিমাণেই খেতে হবে। বেশি উপকার হবে চিন্তা করে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে পেঁপে খেয়ে ফেললে কিন্তু হিতে বিপরীতই হবে।
পাশাপাশি পুষ্টিবিদরা বলেন, খালি পেটে পেঁপে খাওয়া একেবারেই ভাল নয়। এতে ‘পেপসিন’ এবং ‘প্যাপাইন’ নামক উৎসেচকগুলো পাকস্থলীতে গিয়ে গন্ডগোল বাঁধাবে। শিশুদেরও পেঁপে পরিমাণ মতোই খাওয়াতে হবে। জেনে নিন, বেশি পেঁপে খেলে কী কী ক্ষতি হতে পারে?
হজম হবে না
পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা বেশি মাত্রায় শরীরে গেলে হজমের সমস্যা হতে পারে। পাশাপাশি পেঁপেতে থাকা ‘প্যাপাইন’ নামক উৎসেচক হজম পক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটাতে পারে। ‘প্যাপাইন’ অধিক পরিমাণে পেটে গেলে গ্যাস-অম্বলের সমস্যা হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে পেট ফাঁপা, ডায়রিয়ার মতো সমস্যাও হতে পারে।
অ্যালার্জির সমস্যা
পেঁপের মধ্যে ‘প্যাপাইন’ নামক উৎসেচকটি অ্যালার্জিজনিত সমস্যার কারণ হতে পারে। আবার যাদের ‘ল্যাটেক্স অ্যালার্জি’ রয়েছে, তারা পেঁপে বুঝেশুনে খাবেন। কারণ যাদের অ্যালার্জির সমস্যা, তারা যদি পেঁপে বেশি খেয়ে ফেলেন তাহলে শ্বাসযন্ত্রে প্রদাহ হতে পারে। একইসঙ্গে ত্বকেও চুলকানি-জ্বালাও হতে পারে।
কিডনিতে পাথর
পেঁপেতে ভিটামিন ‘সি’ বেশি পরিমাণে থাকে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে ভিটামিন ‘সি’ গুরুত্বপূর্ণ। তবে, তা খেতে হবে পরিমিত পরিমাণে। অতিরিক্ত পরিমাণে পেঁপে খেলে কিডনিতে পাথর জমার আশঙ্কা বেড়ে যেতে পারে।
রক্তে শর্করা কমে যেতে পারে
পেঁপে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের পেঁপে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে ২০১২ সালের একটি গবেষণা বলছে, পেঁপে যদি প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাওয়া হয়, তাহলে তা রক্তে শর্করার মাত্রা আচমকা কমিয়ে দিতে পারে। ফলে ‘হাইপোগ্লাইসেমিয়া’ দেখা দিতে পারে। যারা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণের ওষুধ খাচ্ছেন, তাদের ক্ষেত্রে ‘হাইপোগ্লাইসেমিয়া’ বিপদের কারণ হতে পারে।
অন্তঃসত্ত্বাকে পেঁপে খাওয়াচ্ছেন?
অন্তঃসত্ত্বাকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো জরুরি বটে। তাই রকমারি ফল-সবজি খেতে বলা হয়। কিন্তু এ সময়ে পেঁপে খাওয়া নিরাপদ নয়। কাঁচা পেঁপেতে ল্যাটেক্সযুক্ত পদার্থ রয়েছে। তা গর্ভাশয় সঙ্কোচনের কারণ হতে পারে। গর্ভাবস্থায় কাঁচা বা পাকা পেঁপে খেলে প্লাসেন্টায় রক্তক্ষরণ হওয়ার আশঙ্কাও থাকে।