গাজায় যুদ্ধবিরতির আগে নেতানিয়াহুর হুঁশিয়ারি
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা ব্যর্থ হলে তার দেশ হামাসের বিরুদ্ধে পুনরায় যুদ্ধ শুরু করতে প্রস্তুত রয়েছে। খবর বিবিসি।
আজ রোববার (১৯ জানুয়ারি) যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে নেতানিয়াহু জোর দিয়ে বলেন, যুদ্ধবিরতি "অস্থায়ী" এবং ইসরায়েল গাজায় পুনরায় হামলা চালানোর অধিকার রাখে। এটি করার জন্য নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থন রয়েছে।
নেতানিয়াহু গত ১৫ মাসে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের সাফল্যের কথাও তুলে ধরেন - যার মধ্যে হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের হত্যাকাণ্ডও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
নেতানিয়াহু বলেন, "আমরা মধ্যপ্রাচ্যের চেহারা বদলে দিয়েছি"। হামাস এখন "সম্পূর্ণ একা"।
স্থানীয় সময় আজ রোববার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে, শনিবারের (১৮ জানুয়ারি) ভাষণের আগে নেতানিয়াহু বলেছিলেন, হামাস এর কাছ থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত জিম্মিদের তালিকা না পাওয়া পর্যন্ত ইসরায়েল চুক্তি বাস্তবায়ন করবে না। তিনি আরও বলেন, "ইসরায়েল চুক্তি লঙ্ঘন সহ্য করবে না"।
হামাসের কাছ থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত ৩৩ জন জিম্মির একটি দীর্ঘ তালিকা ইতোমধ্যেই ইসরায়েলি গণমাধ্যম প্রকাশ করলেও কর্মকর্তারা তা নিশ্চিত করেনি।
কিন্তু ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা এখনও তিন জিম্মির নাম পায়নি যাদের রোববার মুক্তি দেওয়া হবে।
এরমধ্যে, ইসরায়েল গাজায় বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। হামাস কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার চুক্তি ঘোষণার পর থেকে ১২০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ১ হাজার ৮৯০ জন ফিলিস্তিনি বন্দীর বিনিময়ে ৩৩ জন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে। চুক্তির শর্ত অনুসারে, ইসরায়েল গাজা থেকে তার সেনা প্রত্যাহারও শুরু করবে।
যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপের শর্তাবলী নিয়ে আলোচনা প্রথম ধাপের ১৬তম দিনে শুরু হবে এবং "যুদ্ধের স্থায়ী অবসান" অর্জনের ওপর আলোকপাত করা হবে।
চুক্তির দ্বিতীয় পর্যায়ের বিশদ বিবরণ এখনও অনিশ্চিত, তবে আশা করা হচ্ছে যে ইসরায়েলি কারাগারে আটক আরও ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেওয়ায় এই পর্যায়ে বাকি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে।
তৃতীয় এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে থাকবে গাজার পুনর্গঠন - যা অনেক বছর সময় নিতে পারে এবং অবশিষ্ট জিম্মিদের মরদেহ ফিরিয়ে আনা হবে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল।
ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা থেকে বাদ যায়নি এই উপত্যকার মসজিদ, বিদ্যালয়, হাসপাতাল, আবাসিক ভবন, এমনকি শরণার্থী শিবিরও।
ইসরায়েলি আগ্রাসনে ২০ লাখের বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। বর্বর এ বাহিনীর নির্বিচার হামলা গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে।