স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির রায় আইন মেনেই কার্যকর করা হবে।

এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘নিজামীকে কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা মানেই ফাঁসির রায় কার্যকর করা নয়। রায় কার্যকরের নিয়ম-কানুন রয়েছে। মৃত্যুদণ্ডাদেশ ও পূর্ণাঙ্গ রায় হাতে পেলেই তাঁর ফাঁসির রায় কার্যকর করা হবে।’

আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়ার সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সাধনা সংসদ ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠন এ সভার আয়োজন করে বলে বার্তা সংস্থা বাসস এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করে।

আজ সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ মতিউর রহমান নিজামীর রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন। এরপর বিকেল ৫টার কিছু পর আপিল বিভাগের একটি প্রতিনিধিদল রায়ের কপি ট্রাইব্যুনালে পৌঁছে দেয়।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে লাল কাপড়ে মোড়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি নিয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের দিকে রওয়ানা হয়। পরে ৭টা পাঁচ মিনিটে জেল সুপার জাহাঙ্গীর আলম রায়ের কপি গ্রহণ করেন।

কারাকর্তৃপক্ষের সূত্রে জানা গেছে, রায়ের কপিটি এখন মতিউর রহমান নিজামীকে পড়ে শোনানো হবে। এরপর তিনি প্রাণভিক্ষার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।

এর আগে গতকাল রোববার রাতে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মতিউর রহমান নিজামীকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে আসা হয়। 

আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, জামায়াতের এই নেতা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষা না চাইলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং তাঁর ফাঁসির রায় কার্যকরের ক্ষণ গণনা শুরু হবে।

নিজামীর রায় কার্যকরকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের হুমকি রয়েছে কি না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের নেতৃত্বে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই কোনো ধরনের হুমকি-ধমকিতে লাভ হবে না।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, জামায়াতের এই নেতার ফাঁসির রায় কার্যকর করার জন্য সবকিছু প্রস্তুত রয়েছে।

সাধনা সংসদ ফাউন্ডেশনের সভাপতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান, জগন্নাথ হল ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি সুভাষ সিংহ রায়, পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক সিদ্দিকুর রহমান ও ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সভাপতি আলী নিয়ামত।

আলোচনা সভা পরিচালনা করেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ। অনুষ্ঠানে দেশের ২৫ বিশিষ্ট নাগরিককে ফাউন্ডেশনের আজীবন সদস্য সম্মাননা সনদ প্রদান করা হয়।