প্রয়োজনে দেশের টাকায় রামপাল হবে : প্রধানমন্ত্রী
প্রয়োজনে নিজেদের টাকায় বাগেরহাটের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি নিকট অতীতে পদ্মা সেতুর অভিজ্ঞতাও তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী আরো জানান, সরকার দেশের আরো কয়েকটি জায়গায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। রামপালের বাইরে মাতারবাড়ী, পায়রা, বাঁশখালী, খুলনা, মুন্সীগঞ্জেও বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে।
বাগেরহাটের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে আজ শনিবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এর আগে সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এরপর সেখানে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন একটি ‘পাওয়ার পয়েন্ট’ উপস্থাপনা করেন।
সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী।
আজ দেশের একটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এই প্রকল্পে ঋণ না দেওয়ার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১৭৭টি প্রতিষ্ঠান ভারতের এক্সিম (এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট) ব্যাংককে অনুরোধ জানিয়েছে। এক খোলা চিঠিতে এসব প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এ অনুরোধ করেছে ব্যাংকট্রাক নামে একটি সংস্থার পরিচালক জোহান ফ্রিজনস।
এ ব্যাপারে একজন সাংবাদিক দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমিও এটি দেখেছি। সংগঠনগুলো কারা সেটি আমরা খোঁজ নিচ্ছি। যদি তারা (এক্সিম ব্যাংক) অর্থ না দেয়, নিশ্চয়ই আমরা অন্য কোনো সোর্স থেকে (টাকা) পাব। আর তাও যদি না পাই তাহলে আমরা নিজেদের টাকায় করব। আমরা কি পিছাইয়া যাওয়ার লোক নাকি? পদ্মা সেতু বন্ধ করছিল না, আমরা কি করি নাই। আমরা নিজেরা করব। তখন এরা কী করে দেখব। এবং সেটা করার ক্ষমতা আমাদের আছে ইনশাল্লাহ। পারব।’
পরিবেশের ক্ষতি ও সুন্দরবনের সম্ভাব্য নানা বিপর্যয় তুলে ধরে বিভিন্ন সংগঠন রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের বিরোধিতা করছে। বামপন্থীদের নেতৃত্বাধীন সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছে। সম্প্রতি বিএনপিও আনুষ্ঠানিকভাবে রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রতিবাদ জানায়।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গত বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রথমবারের মতো রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিরোধিতার কথা জানান। তিনি সুন্দরবনের কাছে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ‘গণবিরোধী ও রাষ্ট্রবিরোধী’ উল্লেখ করে এ প্রকল্প বাতিলের দাবি জানান।
এরপর রামপাল ইস্যুতে বামপন্থীদের বিভিন্ন কর্মসূচিতে সমর্থনের কথা জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ উদ্যোগে সুন্দরবনসংলগ্ন বাগেরহাটের রামপালে নির্মিত হচ্ছে কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ‘বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড’।
প্রকল্পে সহায়তা করছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও ভারতের এনটিপিসি লিমিটেড। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ৫১০ কোটি টাকা। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রকল্পের জন্য ৪৩০ একর ভূমি উন্নয়নকাজ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া চলছে প্রাথমিক অবকাঠামোর কাজ।