মানিকগঞ্জে মীর কাসেমকে দাফন না করার দাবিতে মিছিল
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া আসামি মীর কাসেম আলীকে তাঁর নিজ জেলা মানিকগঞ্জে দাফন না করার দাবিতে শনিবার রাতে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এই মিছিল করেন।
রাত সাড়ে ৮টায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহর প্রদক্ষিণ শেষে প্রেসক্লাবের সামনে এসে সমাবেশ করে।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম মহীউদ্দিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ইঞ্জিনিয়ার তোবারক হোসেন লুডু, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার মোমিন উদ্দিন, সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের জেলা সভাপতি মঞ্জুর আহমেদ।
এদিকে হরিরামপুর উপজেলার চালা গ্রামে মীর কাসেম আলীর বাড়ির পাশে দিয়াবাড়ি বাজারে সন্ধ্যা থেকে কয়েক দফায় বিক্ষোভ করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও মুক্তিযোদ্ধারা।
বক্তারা বলেন, মানিকগঞ্জের পবিত্র মাটিতে নরঘাতক মীর কাসেম আলীর ঠাঁই নেই।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, হরিরামপুর উপজেলার সুতালরি ইউনিয়নের মুন্সীডাঙ্গি গ্রামে বাড়ি ছিল মীর কাসেম আলীর বাবা মৃত তৈয়ব আলীর। অনেক আগেই পদ্মা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ওই গ্রাম। মীর কাসেম আলীর জন্ম ১৯৫২ সালের ৩১ ডিসেম্বর। তাঁর ডাক নাম পিয়ারু ওরফে মিন্টু। চার ভাইয়ের মধ্যে তিনি মেজো। বাবার চাকরির সুবাদে ছোটবেলা থেকেই চট্টগ্রামে থাকতেন তাঁরা।
প্রায় ১৬ বছর আগে মীর কাসেম আলী হরিরামপুর উপজেলার চালা গ্রামে প্রায় ৫০ শতাংশ জমি কেনেন। সেখানে প্রতিষ্ঠা করেন মসজিদ। ২০০১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তিনি মাঝেমধ্যে ওই গ্রামে আসতেন। মসজিদে দলীয় লোকজন নিয়ে বসতেন। কিন্তু সেখানে কোনো বাড়িঘর করেননি। এলাকার কয়েকজন জানান, একসময় চারদলীয় জোট থেকে এই আসনে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন তিনি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর সেখানে আর আসেননি তিনি।
মীর কাসেম আলীর রায় কার্যকরের খবরের মধ্যে আজ সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান জানান, মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকরের পর লাশ ওই চালা গ্রামে দাফন করা হতে পারে। তবে এই সংক্রান্ত কোনো সরকারি আদেশ এখনো আসেনি। তারপরও ওই এলাকাসহ পুরো জেলায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
এসপি আরো বলেন, সেখানে দাফনের যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে। আদেশ এলে তা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।