লেখককে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা, শেষ শয্যা কুড়িগ্রাম
সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের জন্য সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে।
আগামীকাল বুধবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সেখানে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে বরেণ্য এই সাহিত্যিককে শ্রদ্ধা জানাবে সর্বসাধারণ। এরপর তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামে। সেখানেই হবে কবির শেষ শয্যা।
সাহিত্যিক সৈয়দ হকের মৃত্যুর পর ইউনাইটেড হাসপাতালে এনটিভিকে তথ্যগুলো জানান নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার। তিনি বলেন, ‘ইউনাইটেড হাসপাতাল থেকে সৈয়দ হকের মরদেহ গুলশানে নিজ বাড়িতে নেওয়া হবে। সেখান থেকে রাতে লেখকের মরদেহ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হবে।’
রামেন্দু মজুমদার বলেন, ‘এরপর সকাল ১০টায় সৈয়দ হকের মরদেহ প্রথমে তেজগাঁওয়ের চ্যানেল আই কার্যালয়ে নেওয়া হবে। সেখান থেকে বেলা পৌনে ১১টায় মরদেহ নেওয়া হবে বাংলা একাডেমিতে। সেখান থেকে তাঁকে শহীদ মিনারে নিয়ে যাওয়া হবে। বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত সর্বস্তরের জনসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মরদেহ নেওয়া হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানো শেষে জোহরের নামাজের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।’
নাট্য ব্যক্তিত্ব বলেন, ‘জানাজা শেষে হেলিকপ্টারে করে সৈয়দ হকের মরদেহ গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের পাশে তাঁর শেষ ইচ্ছে অনুযায়ী তাঁকে দাফন করা হবে।’
রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ মঙ্গলবার বিকেল ৫টা ২৬ মিনিটে কথাসাহিত্যিক সৈয়দ শামসুল হক মারা যান।
ইউনাইটেড হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজ্জাদুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে জানান, লেখক হাসপাতালের ক্যান্সার কেয়ার সেন্টারের পরামর্শক ডা. অসীম কুমার সেনগুপ্তের অধীনে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
সৈয়দ শামসুল হকের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
লন্ডনের রয়াল মার্সডেন হাসপাতালে চার মাস চিকিৎসার পর গত ২ সেপ্টেম্বর সৈয়দ শামসুল হক দেশে ফেরেন। এর আগে গত ১৫ এপ্রিল ফুসফুসের সমস্যা নিয়ে তিনি লন্ডনে যান এবং সেখানে পরীক্ষায় তাঁর ক্যানসার ধরা পড়ে। লন্ডন থেকে ফিরলে তাঁকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলা সাহিত্যে অসাধারণ অবদান রাখার জন্য এই কবি ও লেখক ১৯৬৬ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ১৯৮৪ সালে একুশে পদক এবং ২০০০ সালে স্বাধীনতা পদক লাভ করেন।
সৈয়দ শামসুল হকের সাহিত্যিক প্রতিভা কালোত্তীর্ণ। গল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস, কবিতা, নাটক, কাব্যনাট্য, চলচ্চিত্রসহ বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তিনি কালজয়ী অবদান রেখেছেন। তাঁর লেখা বেশ কয়েকটি বহুল পরিচিত নাটক বাংলাদেশের মঞ্চনাটকের ইতিহাসে মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হয়।