ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় সমন্বয়হীনতা
রাজধানী ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও পরিবহন সেবার জন্য নেই কোনো বিশেষায়িত সংস্থা। এমনকি নেই তেমন সংস্থা তৈরির উদ্যোগও। বিশেষজ্ঞদের অভিযোগ, ঢাকায় বাস্তবায়িত এবং বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন প্রকল্প শুধু সমন্বয়হীনতার কারণে এখন পরস্পরবিরোধী হয়ে পড়েছে। তাঁদের মতে, ঢাকায় যানজট নিরসন নিয়ে যাই করা হোক, একক কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তা হওয়া উচিত।
রাজধানী হিসেবে ঢাকার ইতিহাস বর্ণাঢ্য; ৪০০ বছরেরও বেশি ঐতিহ্যমণ্ডিত। সময়ের ব্যবধানে অনেক কিছু বদলালেও নগরবাসীর কাছের এখন এক নিত্য ভোগান্তির নাম যানজট। যানজট নিরসনে যেসব পরিকল্পনা ও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তার প্রভাব নিয়ে আছে প্রশ্ন।
রাজধানীর এফডিসিসংলগ্ন রেলগেটের সামনের সড়ক। যানজট কমাতে ফ্লাইওভারটি নির্মাণ করছে এলজিইডি। এতে নিচের সড়কটি হয়েছে সংকীর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্ত। সেই সঙ্গে আছে অবৈধ স্থাপনা ও পার্কিং। সড়ক মেরামতের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের আর অবৈধ স্থাপনা ও পার্কিং মুক্ত করার দায়িত্ব ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের। আবার এখানে যদি বৃষ্টির পানি জমে যায়; তার দায় ঢাকা ওয়াসার। কোনো একক কর্তৃপক্ষ না থাকায় কেউ কারো কাছে দায়বদ্ধ নয়। আর এ সমন্বয়হীনতার কারণে ভোগান্তির শিকার রাজধানীবাসী।
বিশেষজ্ঞদের ক্ষোভ, দীর্ঘদিনেও রাজধানীর পরিবহনব্যবস্থা নিয়ে দেখভালের জন্য একক কর্তৃপক্ষ গড়ে তোলা হয়নি।
যানজট নিরসনের কথা মাথায় রেখে যেসব ফ্লাইওভার, এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে, ওভারপাস, ইন্টার সেকশন, মেট্রোরেল, বৃত্তাকার নৌপথ যা কিছু হয়েছে ও হচ্ছে এবং পরিকল্পনায় আছে; তা বাস্তবায়ন করছে একেকটি প্রতিষ্ঠান। আর এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয় না থাকায় দফায় দফায় পরিবর্তন করতে হয়েছে নকশায়, কাঠামোয়। বেড়েছে ব্যয়; লাগছে বাড়তি সময়। এ ছাড়া এগুলোর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন আছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও এ-সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রকল্প তৈরি ও বাস্তবায়নের একক কর্তৃপক্ষ হিসেবে সে দায়িত্ব থাকা উচিত নগরপিতার কাছে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রও তেমনই মনে করেন।
কিন্তু একটু ক্ষমতা নয়; নগরের প্রয়োজনেই মেয়রকে পূর্ণ ক্ষমতা প্রদানের দিকেই জোর দিচ্ছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা।
রাজধানীর যানজট সমস্যা নিয়ে এস এম আতিকের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের চতুর্থ ও শেষ পর্ব আজ। ভিডিও প্রতিবেদন দেখতে ক্লিক করুন :