মেঘনায় ট্রলারডুবি : নিখোঁজ চারজনের সন্ধান মেলেনি
নরসিংদীর রায়পুরায় মেঘনা নদীতে ট্রলারডুবির একদিন পরও নিখোঁজ চার গরু ব্যবসায়ীর সন্ধান মেলেনি। নিখোঁজ ব্যবসায়ীদের বাড়িতে চলছে মাতম।
আজ বুধবার সকালে ঢাকা থেকে ফায়ার সার্ভিসের ছয় সদস্যের একটি ডুবুরিদল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে। তবে নদীতে তীব্র স্রোতে ও ঢেউয়ের কারণে ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধার কার্যক্রম।
এদিকে, ট্রলারডুবির ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রেহান উদ্দিনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি ঘটন করেছে জেলা প্রশাসন। একই সঙ্গে নিখোঁজদের পরিবারের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে ঝড়ের কবলে পড়ে রায়পুরা উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের বেলোয়ারচর আনন্দবাজারের পার্শ্ববর্তী মেঘনা নদীতে এই ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে।
নিখোঁজ ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার বাহেরচরের আনোয়ার মিয়া, আবদুল্লাহপুরের আবদুল হক, ফরিদ মিয়া ও মেহেরনগরের খলিল মিয়া।
পুলিশ ও দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বাইশমোজা বাজার থেকে প্রায় গরু ব্যবসায়ীরা মাঝি গোলাম মিয়ার ট্রলারযোগে রায়পুরা উপজেলার চরসুবুদ্ধি আসছিলেন। রাত ৮টার দিকে পথিমধ্যে বেলোয়ারচর আনন্দবাজারের পার্শ্ববর্তী মেঘনা নদীতে ট্রলারটি ঝড়ের কবলে পড়ে। এতে ট্রলারটি কাত হয়ে ডুবে যায়। ওই সময় ট্রলারে থাকা গরু ব্যবসায়ীরা সাঁতরে পাড়ে উঠতে পারলেও নিখোঁজ হন চারজন। ট্রলারে থাকা ১৫টি গরু ও মহিষ পানিতে ডুবে মারা যায়।
স্থানীয় লোকজন প্রথমে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। পরে রায়পুরা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়। সকালে ঢাকা থেকে ফায়ার সার্ভিসের ছয় সদস্যের ডুবুরিদল নিখোঁজদের উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে।
দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা জানান, দুর্ঘটনাকবলিত ট্রলারটিতে ৫০ থেকে ৬০ জন মানুষ এবং ২০টি গরু ও মহিষ ছিল।
দুর্ঘটনার একদিন পরেও নিখোঁজরা উদ্ধার না হওয়ায় তাঁদের বেঁচে থাকার আশা হারিয়ে ফেলেছেন স্বজনরা। ফলে স্বজনরা ভিড় জমিয়েছেন নদীর তীরে। তাঁরা নিখোঁজদের উদ্ধারে অভিযান আরো জোরালোর দাবি জানান।
সকালে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রেহান উদ্দিন, উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল মতিন ও রায়পুরা থানা ওসি (তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম সরকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এ সময় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রেহান উদ্দিন জানান, ঘটনার তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। নিখোঁজদের পরিবারকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ হাজার টাকা ও ২০ কেজি চাল অনুদান দেওয়া হবে।