রায় শোনার পর শাহাদাত দম্পত্তির মুখে হাসি
গৃহকর্মী নির্যাতনের মামলায় খালাস পাওয়ায় উৎফুল্ল ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেন ও তাঁর স্ত্রী জেসমিন জাহান নিত্য। আজ রোববার রায় ঘোষণার সময় মামলার বাদি বা ভিকটিম কেউ আদালতে উপস্থিত না থাকলেও উপস্থিত ছিলেন শাহাদাত দম্পতি। রায় ঘোষণার পর বেশ হাসিখুশি দেখা যায় তাঁদের।
ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ৫-এর বিচারক তানজিলা ইসমাইল আজ শাহাদাত ও তাঁর স্ত্রীকে বেকসুর খালাস দেন। রায় দিয়ে বিচারক বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণে রাষ্ট্রপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে, তাই খালাস দেওয়া হলো।
এদিকে এই ক্রিকেটার দম্পতি খালাস পেয়ে যাওয়ায় সন্তুষ্ট নয় বাদীপক্ষ। রায় ঘোষণার পরে বাদীপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ নাজমুল হুদা এনটিভি অনলাইনকে জানান, রায়ে তাঁরা সন্তুষ্ট নন। ভিকটিম ন্যায়বিচার পাননি। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।
ভিকটিম ২২ ধারায় একজন বিচারকের কাছে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন জানিয়ে আইনজীবী বলেন, পরে ওই বর্ণনা আদালতে গৃহীতও হয়েছে। তিনি জানান, মামলায় সাক্ষী দিয়েছেন সাতজন। এর মধ্যে ভিকটিম ছাড়া বাকি ছয়জন নির্যাতনের পক্ষে কথা বলেছেন। এছাড়া চিকিৎসক নিজের সাক্ষ্যে জখমের কথা উল্লেখ করেছেন।
গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুর রহমান শাহাদাত ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের (সিএমএম) আদালতে এই মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৫ সালের ৫ অক্টোবর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে শাহাদাত আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, স্ত্রী নিত্যকে গত বছরের ৪ অক্টোবর ভোরে দিবাগত গভীর রাত সাড়ে ৩টায় মালিবাগের পাবনা গলিতে তাঁর বাবার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে মিরপুর মডেল থানা পুলিশ।
গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারা মোতাবেক ঘটনার বর্ণনা দিয়ে একটি জবানবন্দি দিয়েছিল ভিকটিম হ্যাপি।
এর আগে ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় ক্রিকেটার শাহাদাত তাঁর বাসার গৃহকর্মী মাহফুজা আক্তার হ্যাপিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না মর্মে একটি জিডি করেন। এরপর একই দিন রাত ৮টার দিকে মিরপুরের পল্লবী এলাকা থেকে হ্যাপিকে উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর তাঁকে মিরপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে হ্যাপি অভিযোগ করেন শাহাদাতের বাসায় তাঁর ওপর নির্মম নির্যাতন চালানো হতো।
পরে পুলিশ হ্যাপিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করে। একই সঙ্গে খন্দকার মোজাম্মেল হক নামের ওই এলাকায় বসবাসকারী এক সাংবাদিক শিশু নির্যাতনের দায়ে শাহাদাতের নামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন।