নাসিরনগরের হামলাকারীরা বিন্দুমাত্র ছাড় পাবে না
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় হামলার শিকার হিন্দুদের বাড়িঘর ও মন্দির পরিদর্শন করেছেন ১৪ দলের নেতারা। এ সময় তাঁরা সেখানে এক সমাবেশ থেকে হামলাকারীদের ছাড় না দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আজ বুধবার দুপুরে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিমের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল নাসিরনগরে আসে। প্রতিনিধিদলের সদস্যরা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর ও মন্দির পরিদর্শন করেন।
পরে ১৪ দলের নেতারা স্থানীয় গৌর মন্দিরে আয়োজিত এক সুধী সমাবেশে অংশ নেন। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হকের সভাপতিত্বে এ সময় বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) একাংশের সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া প্রমুখ। এ ছাড়া ১৪ দল, আওয়ামী লীগ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
নাসিরনগরের ঘটনায় সরকার কঠোর অবস্থানে উল্লেখ করে সুধী সমাবেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, এ ঘটনার পর অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সে যেই হোক। তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে এবং দ্রুত বিচার আইনে তাদের বিচার হবে।
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, যারা হিন্দুদের ভিটেমাটি থেকে উৎখাত করতে চায়, নারীদের গায়ে হাত তোলে তারাই এ ঘটনার পেছনে রয়েছে।
একে সরকার ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার যুদ্ধাপরাধী, বঙ্গবন্ধু হত্যার মামলার খুনিদের ছাড় দেয়নি। ২১ আগস্টের খুনিদের, জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের মাফ করছে না। হিন্দুদের ওপর হামলাকারীদের শেখ হাসিনা সরকার একচুলও ছাড় দেবে না।
এদিকে একই দিন সকালে কেন্দ্রীয় মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির একটি প্রতিনিধিদলও নাসিরনগরের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সমবেদনা জানান।
গত ২৮ অক্টোবর নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নে এক যুবক পবিত্র কাবাঘরের ছবি সম্পাদনা করে ফেসবুকে পোস্ট করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এরপর স্থানীয় লোকজন তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করে।
এ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে পরের দিন নাসিরনগর সদর উত্তাল হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় ৩০ অক্টোবর উপজেলা সদরের কলেজ মোড়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। সমাবেশ চলাকালে বেশ কয়েকটি মন্দির ও হিন্দুদের বাড়িতে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা।
এ ঘটনার রেশ না কাটতেই গত ৫ নভেম্বর একই উপজেলায় হিন্দুদের পাঁচটি ঘরে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
আজ বুধবার দুপুরে ১৪ দলের একটি প্রতিনিধিদল নাসিরনগরে এসে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর ও মন্দির পরিদর্শন শেষে স্থানীয় একটি মন্দিরে সুধী সমাবেশ করে। ছবি : এনটিভি