যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন থেকে সরকারকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান বিএনপির
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশকে গণতন্ত্রে ফেরানোর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। আর নির্বাচনে ক্ষমতার বদল হলেও বাংলাদেশ সম্পর্কে মার্কিনিদের অবস্থান পাল্টাবে না বলেও মনে করে দলটি।
অন্যদিকে, আওয়ামী লীগকে গণতান্ত্রিক আচরণে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। ১৩ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির সমাবেশে বাধা না দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আজ বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, টানা তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে আওয়ামী লীগ। নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ সার্চ কমিটি দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত হলেই কেবল বিকশিত হতে পারে গণতন্ত্র।
রিজভী আহমেদ বলেন, ‘ক্ষমতায় তো আছে ডেমোক্রেটিক পার্টি। কিন্তু জিতেছেন রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী। এখান থেকে যদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষা নেন, তাহলে তিনি সত্য কথা বলবেন। তিনি যে ৫ জানুয়ারি ২০১৪ সালে নির্বাচনের কথা বলেন, সেই নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন এগুলো বলার ক্ষেত্রে আমার মনে হয়েছে ওনার মধ্যে কিছুটা দ্বিধা তৈরি হবে।’
এদিকে জাতীয় প্রেসক্লাবে মুক্তিযোদ্ধা দলের আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সবাইকে অবাক করে দিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প বিজয়ী হয়েছেন। সারা বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্র, বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মানুষ, অধিকাংশ মানুষ চিন্তাই করেনি এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। প্রতিটি রাষ্ট্রে জাতীয়তাবাদী চেতনা মাথাচড়া দিয়ে উঠেছে। সব রাষ্ট্র এখন নিজের স্বার্থ দেখে। আমেরিকায় যে-ই প্রেসিডেন্ট হোক বাংলাদেশের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি খুব একটা পরিবর্তন হবে বলে আমি মনে করি না। কারণ আমেরিকা সব সময় নিজের স্বার্থকেই প্রাধান্য দেয়।’
এদিকে, বিএনপির জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের সমাবেশ নিয়ে সরকারের অবস্থানের কড়া সমালোচনা করেন দলের স্থায়ী কমিটির দুই সদস্য।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘৭ নভেম্বর এই দেশটাকে একটি সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার লক্ষ্য নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এটা কারো পক্ষে না। আর বলে আদর্শ কী? আদর্শ তো এটাই। যে গণতন্ত্র আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে লাখ লাখ মানুষের জীবন দিয়ে অর্জন করেছিলাম। সেটাকে আপনারা জবাই করেছিলেন। ওই গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনাটাই হলো আদর্শ।’
অনুষ্ঠানে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা দেখতে চাই এই সরকারের চরিত্র। আবার যদি তারা টালবাহানা করে আমাদের সমাবেশ করতে না দেয় তাহলে ধরে নেব এই সরকার সম্পূর্ণভাবে তাদের গণতান্ত্রিক চরিত্র হারিয়ে ফেলেছে।’
জাতীয় প্রেসক্লাবে আলাদা দুটি অনুষ্ঠানে বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরামের নেতারা বলেন, ৭ নভেম্বরের আদর্শকে অনুসরণ করেই আবারো দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবে বিএনপি।