টাটা সাম্রাজ্যের ভিত নড়াতে চান সাইরাস মিস্ত্রি?
ভারতের বহুজাতিক ব্যবসায়িক সংস্থা টাটার সাম্রাজ্যের ভিত নড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন গ্রুপটির সাবেক চেয়ারম্যান সাইরাস মিস্ত্রি।
টাটা পরিবারের পক্ষ থেকে এমন অভিযোগ করা হচ্ছে। শনিবার ইকোনোমিক টাইমসের অনলাইনে এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত আইরিশ ব্যবসায়ী সাইরাস মিস্ত্রি ২০১২ সালে টাটা গ্রুপের ষষ্ঠ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনি খরচ কমিয়ে গ্রুপের বিভিন্ন ব্যবসায় মুনাফা বাড়িয়েছেন।
টাটা গ্রুপের নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান টাটা সন্সের বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে চলতি বছরের ২৪ অক্টোবর পর্ষদের সম্মতি নিয়ে মিস্ত্রিকে গ্রুপের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানো হয়। আর রতন টাটাকে অন্তর্বর্তীকালীন চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
গতকাল শুক্রবার টাটা সন্সের পক্ষ থেকে অভিযোগ করে বলা হয়, স্বাধীন পরিচালকদের ‘ব্যবহার করে’ ইন্ডিয়ান হোটেলসের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিতে চেষ্টা করেছেন মিস্ত্রি। এ ছাড়া গ্রুপের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের স্বাধীন পরিচালক নুসলি ওয়াদিয়ার সঙ্গে হাত মিলিয়ে টাটা সাম্রাজ্যের ভিত নড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি।
টাটা সন্স ও টিসিএসের পর গ্রুপের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকেও সাইরাস মিস্ত্রিকে মালিকানা থেকে বাদ দিতে এখন উঠে পড়ে লেগেছে টাটা পরিবার। তবে টাটা স্টিল, ইন্ডিয়ান হোটেলসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে টাটাদের মালিকানা কম থাকায় মিস্ত্রিকে সেসব প্রতিষ্ঠান থেকে সরানো যাবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। আর তিনজন স্বাধীন পরিচালকও তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন।
টাটা কনসালট্যান্সি সার্ভিসেসে (টিসিএস) টাটা সন্সের মালিকানা রয়েছে ৭৩ দশমিক ২৬ শতাংশ। কিন্তু টাটা কেমিক্যালসে তাদের শেয়ার ১৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ, টাটা মোটরসে ২৬ দশমিক ৫১ শতাংশ আর ইন্ডিয়ান হোটেলসে ২৮ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ।
সাইরাস মিস্ত্রি খরচ কমিয়ে ও কিছু ব্যবসা বেঁচে দিয়ে টাটাদের সংস্থাগুলোকে আরো লাভজনক করার চেষ্টা করছিলেন। এ জন্য তা সমর্থন পাচ্ছিল প্রতিষ্ঠানগুলোয় অংশীদারত্ব থাকা বিভিন্ন আর্থিক সংস্থার। এতে তাদের মতামত অগ্রাহ্য করা টাটাদের পক্ষে কঠিন হতে পারে। এরই মধ্যে ইন্ডিয়ান হোটেলস ও টাটা কেমিক্যালসে মিস্ত্রির পাশে দাঁড়িয়েছেন তাদের স্বাধীন পরিচালকরা। তাঁদের মত উড়িয়ে দেওয়াও টাটাদের ভাবমূর্তির পক্ষে ভালো হবে না।
তবে মিস্ত্রিকে নিয়ে টাটাদের মনে সন্দেহ ঢুকায় যেকোনো মূল্যে তারা তাঁকে সংস্থাগুলো থেকে দ্রুত সরাতে চাইবে বলে করপোরেটরা ধারণা করছে। এ পরিস্থিতিতে বিষয়টি গড়াতে পারে আদালত পর্যন্ত।