সেনার প্রয়োজন নেই : আইভী
বিএনপির দাবি থাকলেও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের এই মুহূর্তে সেনাবাহিনীর কোনো প্রয়োজন নেই বলে মনে করছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী।
আজ বৃহস্পতিবার সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র বলেন, ‘গতবার প্রথম দিকে আমি প্রথম সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছিলাম। পরে আপনাদের সামনেই আমি বলেছি, নারায়ণগঞ্জের লক্ষ মানুষই আমার সেনাবাহিনী।’
‘গতবার সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে সেনাবাহিনী ছাড়াই। এবারো আমি মনে করি, মানুষ যদি একাত্ম থাকে তাহলে মানুষই সেনাবাহিনীর ভূমিকা পালন করে। মানুষের অধিকারের জায়গা থেকেই বলতে চাই, নারায়ণগঞ্জবাসীর জন্য এই মুহূর্তে কোনো সেনাবাহিনীর প্রয়োজন নেই। আমার লক্ষ জনতা আমার সেনাবাহিনী’, যোগ করেন আইভী।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের দ্বিতীয় নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষে দিনে আজ নারায়ণগঞ্জ ক্লাব মিলনায়তনে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দলীয় নেতাদের নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন নগরীর প্রথম এ মেয়র।
মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন আইভী।
তবে এ নির্বাচনে আইভীর প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নারায়ণগঞ্জে ভোটের আগে সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন।
আজ মনোনয়নপত্র জমাদানের সময় নগর আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকে দেখা না গেলেও আইভী সাংবাদিকদের জানান, তাঁরা সবাই আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আছেন। নির্বাচনী আচরণবিধির বাধ্যবাধকতার কারণে সবাই এখানে আসেননি। তবে তৃণমূল ঐক্যবদ্ধ আছে।
এবারই প্রথম রাজনৈতিক দলের প্রতীক নিয়ে মেয়র প্রার্থী হলেও জাতীয় রাজনৈতিক প্রভাব এই স্থানীয় সরকারের ভোটে পড়বে না বলেই মনে করেন সেলিনা হায়াৎ আইভী।
জেলা আওয়ামী লীগের এ নেতা আরো বলেন, এখানে মেয়র পদে যারা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছে তারা শক্তিশালী প্রার্থী। নির্বাচন মানেই চ্যালেঞ্জ। সেটা মাথায় রেখেই অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে লড়তে চান তিনি।
গতবারের মতো এবারো জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন সাবেক মেয়র আইভী।
নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২২ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিল আজ ২৪ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র যাচাই ও বাছাই করা হবে আগামী ২৬ ও ২৭ নভেম্বর। নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ সময় আগামী ৪ ডিসেম্বর। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ইতিহাসে এটি দ্বিতীয় নির্বাচন।
২০১১ সালের ৫ মে নারায়ণগঞ্জ, সিদ্ধিরগঞ্জ ও কদমরসুল এ তিনটি পৌরসভা বিলুপ্ত করে ২৭টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত হয় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন। একই বছর ৩০ অক্টোবর প্রথমবারের মতো সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী শামীম ওসমানকে পরাজিত করে সিটির প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন সেলিনা হায়াৎ আইভি। তিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী যিনি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে আইভি বিলুপ্ত হওয়া নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন।
এখানে একজন মেয়রের সঙ্গে ২৭টি সাধারণ ও ৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ভোট হবে। মোট ভোটার চার লাখ ৭৯ হাজার ৩৯২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার দুই লাখ ৪১ হাজার ৫১৪ জন এবং নারী ভোটার দুই লাখ ৩৭ হাজার ৮৭৮ জন। এবার ভোটার বেড়েছে প্রায় পৌনে এক লাখ। সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র ১৬৩টি এবং ভোটকক্ষ এক হাজার ২১৭টি।