ইসলামী গবেষণা সংস্থা বন্ধ সাম্প্রদায়িক সিদ্ধান্ত : জাকির নায়েক
মুম্বাইয়ে ইসলামী গবেষণা সংস্থা (আইআরএফ) বন্ধ ভারত সরকারের সাম্প্রদায়িক সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের বিতর্কিত ইসলামবিষয়ক বক্তা জাকির নায়েক। নিজের টুইটারে শনিবার এ নিয়ে একটি টুইট করেন তিনি।
টুইটারে দেওয়া ওই মন্তব্যে জাকির নায়েক লেখেন, “যেহেতু কিছু মানুষ বলে থাকেন, আমি ‘মুসলিম কার্ড’ নিয়ে খেলছি, আর এখন বিষয়টি প্রমাণিত যে সম্পূর্ণ সাম্প্রদায়িক সিদ্ধান্তে কর্তৃপক্ষ আইআরএফ বন্ধ করেছেন।”
সম্প্রতি জাকির নায়েকের প্রতিষ্ঠিত আইআরএফকে পাঁচ বছরের জন্য ভারতে নিষিদ্ধ করা হয়। বেআইনিভাবে কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ আইনে (ইউএপিএ) ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) আইআরএফ ও প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেয়। পাশাপাশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে আইআরএফের সব কার্যকলাপের ওপরে নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি বিদেশি অনুদান আনতে পারবে না বলেও নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এরপর গত সোমবার জাকির নায়েকের ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটও বন্ধ করে দেয় দেশটির সরকার। এ ছাড়া ‘ধর্মীয় বৈরিতা’ ছড়ানোর দায়ে জাকির নায়েকের ব্যক্তিগত ফেসবুক-টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো বন্ধেরও উদ্যোগ নিয়েছে ভারত।
এর আগে ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যে জাকির নায়েকের ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে সম্পর্ক আছে এমন ১০টি স্থানে অভিযান চালানো হয়। ওই সব প্রতিষ্ঠানে পাওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে ‘বৈরিতা’ ছড়ানোর অভিযোগ আনে দেশটির সরকার।
এরপর গত সোমবার সৌদি আরবে অবস্থানরত এই ধর্মবিষয়ক বক্তাকে দেশে ফেরাতে উদ্যোগের কথাও জানায় এনআইএ। নিরাপত্তা সংস্থাটি জানিয়েছে, সেখান থেকে তাঁকে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলেরও সাহায্য নেওয়া হতে পারে।
এনআইএর এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি তখন জানিয়েছিল, জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে প্রথমে একটি জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হবে। তার পরই ইন্টারপোলের রেড কর্নার নোটিশের আবেদন করবে। আর তাহলে জাকির নায়েককে ভারতের হাতে তুলে দিতে বাধ্য হবে সৌদি সরকার।
এর আগে যুবকদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপে উৎসাহিত করার অভিযোগে ভারত পুলিশ জাকিরের বিরুদ্ধে মামলা করে। জাকির নায়েককে ভারতের পাশাপাশি যুক্তরাজ্য, কানাডা ও মালয়েশিয়ায়ও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ইসলামবিষয়ক এই বক্তা বর্তমানে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন। আপাতত তিনি ভারতে যাচ্ছেন না বলে খবর পাওয়া গেছে।
চলতি বছরের জুলাইয়ে ঢাকার গুলশানে অবস্থিত স্প্যানিশ রেস্তোরাঁ ‘হলি আর্টিজান বেকারি’তে সন্ত্রাসী হামলায় ২০ জন নিহত হয়। সে সময় বাংলাদেশ সরকার অভিযোগ করে, জাকির নায়েকের বিভিন্ন বক্তব্যে প্রভাবিত হয়েই সন্ত্রাসীরা এ হামলা চালিয়েছিল। এর পর পরই ভারত সরকার জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে তদন্তের পদক্ষেপ নেয়।