সাঁওতালদের আরো জমির ধান বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতালদের রোপণ করা আরো ১৫ একর জমির ধান কেটে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বুঝিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। রংপুর সুগার মিল কর্তৃপক্ষকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
আজ বুধবার রাষ্ট্রপক্ষে এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন দাখিলের পর বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এক রিটের শুনানি নিয়ে গত ১৭ নভেম্বর সাঁওতালদের ধান কাটার সুযোগ দিতে অথবা ধান কেটে সাঁওতালদের বুঝিয়ে দিতে চিনিকল কর্তৃপক্ষসহ বিবাদীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে সাঁওতালদের অবাধে চলাফেরার অধিকার নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি হামলার ঘটনায় কয়টি মামলা হয়েছে, কারা আসামি রয়েছেন, সে বিষয়ে ৩০ নভেম্বর প্রতিবেদন দাখিলে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার (এসপি) ও গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেওয়া হয়।
একই সঙ্গে রুলও জারি করেন আদালত। এতে সাঁওতালদের জীবন-মান সম্পত্তি রক্ষায় বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন আদালত।
আজ পুলিশসহ সংশ্লিষ্টরা প্রতিবেদন দাখিল করেন। আর চিনিকল কর্তৃপক্ষ জানায়, এখনো ১৫ একর জমির ধান পাকেনি। আগামী ছয়/সাত দিনের মধ্যে তা পাকবে। বাকি জমির ধান কেটে সাঁওতালদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর পর আদালত বাকি জমির ধানও কেটে ১৫ দিনের মধ্যে বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন ও জেড আই খান পান্না। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।
গত ১৬ নভেম্বর আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) ও ব্রতী সমাজকল্যাণ সংস্থার পক্ষ থেকে হাইকোর্টে এ রিট দায়ের করা হয়।
রিটে স্বরাষ্ট্র সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, শিল্প সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, পুলিশের রংপুর রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক, গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান, রংপুর সুগার মিল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সাহেবগঞ্জ সুগারক্যান ফার্মের উপমহাব্যবস্থাপক, স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে বিবাদী করা হয়েছে।
গত ৬ নভেম্বর গোবিন্দগঞ্জের সাহেবগঞ্জ আখ খামারের জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে সেখানে বসবাসরত প্রায় আড়াই হাজার সাঁওতাল বসতি পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। স্থানীয় বাঙালি-পুলিশ ও সাঁওতালদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে তিন সাঁওতাল নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হন।