সাঁওতালদের বাড়িঘরে আগুন দিয়েছিল পুলিশ!
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালদের ওপর হামলার ঘটনা নতুন মোড় নিয়েছে। সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা গেছে, সাঁওতালদের বাড়িঘরে আগুন লাগিয়েছেন স্বয়ং পুলিশ সদস্যরাই।
গতকাল সোমবার মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, সাঁওতালদের এলাকায় প্রবেশ করেছে পুলিশ সদস্যদের একটি দল। আশপাশে আরো অনেক গুলির আওয়াজ পাওয়া যায়। এ সময় দলটি একটি বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় সেই বাড়িটির চালা থেকে কিছু খড় খুলে নিয়ে তাতে আগুন ধরানোর চেষ্টা করেন এক পুলিশ সদস্য। তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন ওই দলে থাকা গোলাপি পোশাক পরিহিত আরেক ব্যক্তি। পরে শার্ট পরিহিত আরেক ব্যক্তি এসে তাঁদের সহযোগিতা করেন। কিছুক্ষণ পরই দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে বাড়িটি। আর পাশে দাঁড়িয়ে তা দেখতে থাকেন অন্য পুলিশ সদস্যরা।
গত ৬ নভেম্বর সাহেবগঞ্জ আখ খামারের জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে সেখানে বসবাসরত প্রায় আড়াই হাজার সাঁওতাল বসতি পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। স্থানীয় বাঙালি-পুলিশ ও সাঁওতালদের মধ্যে সংঘর্ষে কয়েকজন সাঁওতাল আহত হন। নিহত হন তিনজন। এ ঘটনায় মামলা করা হয় শতাধিক নামে। এতে আহত তিন সাঁওতালকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে সাঁওতালদের ওপর হামলার ঘটনায়ও আলাদা মামলা করা হয়।
এর পর থেকে ঘরবাড়ি হারিয়ে গাছতলায় বা অস্থায়ী পাতার ঘর বানিয়ে বাস করছেন সাঁওতাল পরিবারগুলোর সদস্যরা। গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও তদন্ত করতে সেখানে যান জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদের আদিবাসীবিষয়ক ককাসের সদস্যসহ একটি প্রতিনিধি দল। এ সময় তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন এবং এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দেন।
এমন পরিস্থিতিতে এই ভিডিওটি প্রকাশ পেল। যেখানে দেখা যাচ্ছে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা নয় বরং পুলিশ সদস্যরাই সাঁওতালদের বাড়িতে আগুন লাগিয়েছেন।
এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত কুমার সরকার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, বিষয়টি তাঁরা খতিয়ে দেখছেন। যদি এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।