এমপি লিটনকে হত্যায় জামায়াতের জঙ্গিরা : নানক
গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনকে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের জঙ্গিরা হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক। আগে থেকেই এই গোষ্ঠী এমপি লিটনকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল বলেও দাবি করেন তিনি।
আজ রোববার সকালে এই আওয়ামী লীগ নেতার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল যায়। এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ অভিযোগ করেন।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, এ হত্যাকাণ্ড যারা ঘটিয়েছে, সংসদ সদস্য লিটনকে যারা হত্যা করেছে, তারা দেশবাসীর কাছে পূর্বপরিচিত। তারা এই দেশকে একটি নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে নেওয়ার জন্য যারা এই সুন্দরগঞ্জ থেকে শুরু করে, যারা সারা বাংলাদেশে, যারা একটি নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল, সেই জামায়াত-শিবির জঙ্গিগোষ্ঠী তাঁকে প্রতিমুহূর্তে তিনি একটি আতঙ্কের মধ্যে ছিলেন, তাঁকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল। সেই গোষ্ঠীটি গতকাল এই লিটনকে নির্মমভাবে তাঁর নিজ বাড়িতে গুলিবিদ্ধ করে হত্যা করে।’
এমপি লিটনকে হত্যার পর সারা দেশের আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে বলে জানান নানক। রাজনৈতিকভাবে এ ঘটনা প্রতিহতের ঘোষণাও দেন তিনি। নানক বলেন, ‘গতকাল এই হত্যাকাণ্ডের পরে শুধু সুন্দরগঞ্জ নয়, শুধু গাইবান্ধা নয়, রংপুর থেকে শুরু করে সারা বাংলাদেশ ও তার সহযোগী সংগঠন বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে। এ ঘটনা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করা হবে এবং রাজনৈতিকভাবেই এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ, প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। পাশাপাশিভাবে প্রশাসনের কাছে আমাদের আকুল আবেদন থাকবে অবিলম্বে এই জামায়াত-জঙ্গিগোষ্ঠীকে যারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তাদের আইনের আওতায় এনে যথোপযুক্ত বিচার করা হোক।’
গতকাল শনিবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে মোটরসাইকেলের তিন আরোহী আকস্মিকভাবে বামনডাঙ্গার মাস্টারপাড়ায় এমপি লিটনের নিজ বাড়িতে ঢুকে তাদের পিস্তল থেকে তাকে লক্ষ্য করে কয়েকটি গুলি ছুড়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। গুলির শব্দে পরিবার ও প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে তাঁকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে এমপি লিটনের মৃত্যু হয়।
রংপুর মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের প্রধান বিমল চন্দ্র রায় জানান, সংসদ সদস্য লিটনকে খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়েছে। তাঁর শরীরে মোট পাঁচটি গুলি লেগেছে। এর মধ্যে দুটি গুলি লেগেছে বুকে আর তিনটি লেগেছে হাতে। একটি গুলি বুক দিয়ে ঢুকে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে গেছে।
সুন্দরগঞ্জ থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আবদুর রহমান জানান, গতকাল রাতভর অভিযান চালিয়ে সুন্দরগঞ্জসহ আশপাশের এলাকা থেকে এমপি লিটন হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ১৫ জনকে আটক করা হয়েছে। তবে তাদের পরিচয় জানানো হয়নি।