দুই বছর পর আরিফুল হক জামিনে মুক্ত
দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
আজ বুধবার বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে দুই বছর পাঁচদিন কারাভোগের পর সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান আরিফুল হক।
আরিফুল হকের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার আবু সায়েম। তিনি জানান, সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে তাঁর মুক্তির আদেশটি আসে। তারপর নিয়মিত প্রক্রিয়া শেষে আরিফুল হককে ৪টা ৫০ মিনিটে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।
এর আগে আরিফুল হক মুক্তি পেতে যাচ্ছেন এমন সংবাদে দুপুর থেকেই সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে ভিড় করেন গণমাধ্যমকর্মী ও আরিফের ঘনিষ্ঠজনরা।
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হিসেবে ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর হবিগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণ করেন আরিফ। ওই দিন আদালত তাঁর জামিন নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠান। এর পর থেকেই কারাবন্দি ছিলেন আরিফ। মাঝখানে অবশ্য মায়ের অসুস্থতার কারণে ১৫ দিনের জন্য প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। আরিফ মুক্তি পেতে যাচ্ছেন সে আভাস মিলেছিল বুধবার সকালেই। এ সময় সিলেট দায়রা জজ মনির আহমদ পাটোয়ারীর আদালতে আরিফুল হক চৌধুরীকে হাজির করা হয়। এ সময় আসামিপক্ষ আদালতে আরিফের জামিনের কাগজপত্র প্রদর্শন করেন। আদালতও মুক্তিতে সম্মতি জানান। এরপর আরিফের মুক্তির কেবল সময়ের ব্যাপার বলে জানিয়েছিলেন তাঁর আইনজীবীরা।
আরিফুল হক সাবেক অর্থমন্ত্রী এ এম এস কিবরিয়া ছাড়াও আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জনসভায় বিস্ফোরণ ও হত্যা মামলারও আসামি। এই দুটি ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক মামলাসহ মোট চারটি মামলাতেই জামিন পেয়েছেন আরিফুল।
২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভা শেষে ফেরার পথে গ্রেনেড হামলায় নিহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়াসহ পাঁচজন। এ ঘটনায় হত্যা এবং বিস্ফোরক আইনে পৃথক দুটি মামলা করা হয়। ২০১৪ সালের গত ২১ ডিসেম্বর আরিফুল হক চৌধুরী, জি কে গউছ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ ১১ জনকে অভিযুক্ত করে হবিগঞ্জে আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
এদিকে, ২০০৪ সালের ২১ জুন সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জনসভায় বোমা হামলা হলে এক যুবলীগকর্মী নিহত হন। দুটি মামলাতে আসামি করা হয় আরিফুলকে। নির্বাচিত মেয়র হলেও এ মামলার কারণে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়।
কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর আরিফুল হক চৌধুরী হযরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত করেন। এরপর তিনি এনটিভি অনলাইনকে জানান, বিপদে-আপদে সিলেটের মানুষ তাঁর সঙ্গে ছিলেন, আর তাঁদের নিয়েই তিনি সিলেটের উন্নয়নে এগিয়ে যেতে চান।