ক্রাইস্টচার্চে বিকেলের ঝড়ে চালকের আসনে বাংলাদেশ
প্রথম দুটি সেশনে পিছিয়ে থেকেও সাকিবের উপর্যুপরি আঘাতে শেষ সেশনে খেলায় ফিরে আসে বাংলাদেশ। ৩ উইকেট নিয়ে স্বাগতিকদের ব্যাকফুটে ঠেলে দেন সাকিব। বৃষ্টিবাধায় দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ হবার সময় বাংলাদেশের চেয়ে ২৯ রানে পিছিয়ে ছিল স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। ৩ উইকেট হাতে নিয়ে তৃতীয় দিন আবার ব্যাট হাতে নামবে কিউইরা।
হেনরি নিকোলস ও সিচেল স্যান্টনারের জুটিতে যখন বড় লিডের স্বপ্ন দেখছিল নিউজিল্যান্ড ঠিক সেই সময় আঘাত হানেন সাকিব। মাত্র চার রানে তিনজন কিউই ব্যাটসম্যানকে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়ে দিয়ে বাংলাদেশকে খেলায় ভালোভাবে ফিরিয়ে আনেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। দলীয় ২৫২ রানে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে স্যান্টনারকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন সাকিব। এরপর চার রানের ব্যবধানে বিজে ওয়াটলিংকে বোল্ড করেন বাংলাদেশের সম্ভাবনা উজ্জ্বল করেন সাকিব। স্কোরবোর্ডে আর কোনো রান যোগ না হতেই কলিন ডি গ্রান্ডহোমকেও ফেরান বাংলাদেশি অলরাউন্ডার।
এর আগে স্যান্টনার ও নিকোলসের ৭৫ রানের জুটিতে লিডের স্বপ্ন দেখছিল স্বাগতিকরা। দিনের খেলা শেষ হওয়ার সময় ৭ উইকেটে ২৬০ রান করেছে নিউজিল্যান্ড। হেনরি নিকোলস ৫৬ ও টিম সাউদি ৪ রানে অপরাজিত আছেন।
শনিবার দিনের প্রথম সেশনে ৪৭ রানে দুই উইকেট হারিয়ে ফেলা নিউজিল্যান্ড টম ল্যাথাম ও রস টেলরের ব্যাটে বড় রানের স্বপ্ন দেখছিল। তবে স্বাগতিকদের জন্য দুঃস্বপ্ন হয়ে দেখা দেন তাসকিন আহমেদ ও মেহেদী হাসান মিরাজ। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা ল্যাথাম-টেলরের ১০৬ রানের জুটিটা ভাঙেন তাসকিন। উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের গ্লাভসবন্দি হওয়ার আগে ৬৮ রান করেন ল্যাথাম। এরপর আরেক বিপজ্জ্নক ব্যাটসম্যান রস টেলরকে ফেরান মিরাজ। মিড অনে তাইজুলের তালুবন্দি হওয়ার আগে ১০৩ বলে ৭৭ রান করেন টেলর।
এর আগে ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের দ্বিতীয় দিনে প্রথম ওভারেই পেস ও বাউন্স দিয়ে তাসকিন আহমেদ বুঝিয়ে দিয়েছেন এই উইকেট পেসারদের জন্য। এদিন সকালে তিনি নিজে হয়তো সাফল্য পাননি, তবে আরেক পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি দুই উইকেট তুলে নিয়ে স্বাগতিকদের কিছুটা চাপেই ফেলে দেন।
এর আগে অবশ্য প্রথম ইনিংসে ২৮৯ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। সর্বোচ্চ ৮৬ রান করেছেন সৌম্য সরকার। এ ছাড়া সাকিব ৫৯ ও অভিষিক্ত নুরুল হাসান সোহান করেন ৪৭ রান। অভিজ্ঞতা না থাকলেও নতুনরা অবশ্য দারুণ লড়াই করেছেন। আলো ছড়িয়েছেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান সোহানও।
অনেক দিন পর রানের দেখা পেয়েছেন সৌম্য সরকার। বেশি রান না পেলেও নাজমুল হোসেন শান্ত যে লম্বা দৌড়ের ঘোড়া, সেটা কিন্তু বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। রানটা যে এত দূর এসেছে তাতে লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানদেরও ভূমিকা অনেক। কারণ, দলীয় রানটা ২০০ পেরোনোর আগেই সাকিব-তামিম-মাহমুদউল্লাহরা ফেরেন প্যাভিলিয়নে। এর পর শুরু হয় দুই অভিষিক্তের লড়াই। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে সোহান-শান্ত যোগ করেন ৫৩ রান। তাতেই ক্রাইস্টচার্চের প্রথম দিনে লড়াইয়ের মতো পুঁজি দাঁড় করায় বাংলাদেশ।
শান্ত ১৮ রান করে আউট হলেও সোহান দারুণ খেলেছেন। মাত্র ৩ রানের জন্য টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি বঞ্চিত হন এই ব্যাটসম্যান। এর আগে অবশ্য মেহেদি হাসান মিরাজও আউট হন ১০ রান করে।