২০১৫ সালের তুলনায় দুর্নীতি কমেছে
বেসরকারি সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) ২০১৬ সালের সূচকে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় ১৫তম অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। সে অনুযায়ী, আগের বছরের তুলনায় সূচকে দুই ধাপ উন্নতি হয়েছে। আবার তিন বছর আগের তুলনায় হয়েছে এক ধাপ অবনতি।
আজ বুধবার রাজধানীর ধানমণ্ডির মাইডাস সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য উপস্থাপন করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
জার্মানির বার্লিন থেকে সারা বিশ্বে একযোগে প্রকাশিত হয় দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের ২০১৬ সালের দুর্নীতির ধারণাসূচক।
ওই সূচক প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আইনি, প্রাতিষ্ঠানিক ও নীতিকাঠামো তুলনামূলকভাবে সুদৃঢ়তর হয়েছে নীতিনিয়ন্ত্রণ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে, যে কারণে এই ধারণা থেকে স্কোর কিছুটা বেড়েছে। তবে ২০১৫ সালের তুলনায় দুর্নীতি কমলেও ২০১৩ সালের তুলনায় দুর্নীতি বেড়েছে।’
ড. ইফতেখারুজ্জামান আরো বলেন, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতির ধারণা সূচক ২০১৬ অনুযায়ী, বাংলাদেশ এখন শীর্ষ দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে ১৫তম। সান্ত্বনা এটাই, ২০০১ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত বাংলাদেশে ছিল এক নম্বর দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ। আবার দ্বন্দ্বে পড়তে হয় এটা ভেবে শীর্ষ দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের এখন যে অবস্থান, তা ২০১৫ সালে ছিল ১৩তম। কিন্তু ২০১৩ সালে ছিল ১৬তম।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি দুর্নীতি প্রতিরোধে রাজনৈতিক সদিচ্ছা বাড়ানোর ওপর জোর দেয়। এতে জানানো হয়, বাংলাদেশের মতোই সমান স্কোর পেয়েছে আরো পাঁচটি দেশ। এগুলো হলো ক্যামেরুন, গাম্বিয়া, কেনিয়া, মাদাগাস্কার ও নিকারাগুয়া।
টিআইবির ব্যাখ্যা অনুযায়ী, বাংলাদেশের এক বছরে দুই ধাপ উন্নতির যে চিত্র পাওয়া যাচ্ছে, তা দুর্নীতি কম হওয়ার কারণে নয়। এর প্রকৃত কারণ বিশ্বে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের সংখ্যা বাংলাদেশের তুলনায় বেড়ে যাওয়া। একটা দেশের দুর্নীতির চিত্র ভালো হয়েছে কি না, তা যে স্কোর দেখে বোঝা যায়, সেই স্কোর অনুযায়ী বাংলাদেশে আগের বছরের তুলনায় দুর্নীতির চিত্র কিছুটা ভালো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, ‘যারা দুর্নীতি করে, সরকার তাদেরকে কতখানি স্বচ্ছতার সঙ্গে এবং ন্যায্যতার সঙ্গে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে পারছে। সেখানটাও সরকারের সফলতা, ব্যর্থতা দুটাই বিবেচনায় নিয়ে আসা হয়েছে। আমাদের স্কোর দেখলে বোঝা যায়, সেখানে হয়তো ব্যর্থতার পাল্লাটাই বেশি করে দেখা দিয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য আলী ইমাম মজুমদার, এম হাফিজউদ্দিন খান, সদস্য সুমাইয়া খায়ের প্রমুখ।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বিশ্বের ১২টি খ্যাতনামা গবেষণা প্রতিষ্ঠানের জরিপ থেকে পৃথকভাবে তথ্য সংগ্রহ করে তা বিশ্লেষণ ও সমন্বয়ের মাধ্যমে দুর্নীতির ধারণাসূচক প্রতিবেদন তৈরি করে।