বক্তব্য দিলেই হবে না, বাস্তবায়ন করতে হবে : সংস্কৃতিমন্ত্রী
সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ছাত্রলীগের নেতাদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘শুধু বক্তব্য দিলেই হবে না। যা বলছেন তা বাস্তবায়ন করে দেখাতে হবে।’
আজ বৃহস্পতিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সপ্তাহ উপলক্ষে কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে আয়োজিত অনষ্ঠানে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘আজকের দিনের সব চাইতে বড় চ্যালেঞ্জ হলো শিক্ষার সাথে সংস্কৃতির মিলন ঘটানো। একটা সময় স্কুলগুলোতে শিক্ষকরা জোর করে আমাদের দিয়ে কবিতা, গান, নৃত্যসহ নানা সংস্কৃতিক বিষয়ে যুক্ত করাতেন। যার ফল হিসেবে আমি আজ আপনাদের সাথে এখানে কথা বলতে পারছি। এই চর্চাটা গ্রামের দিকের স্কুলগুলোতে কম হচ্ছে বলে তারা পিছিয়ে পড়ছে, যা আমাদের সামনের দিকের বাধা হিসেবে কাজ করতে পারে। বর্তমানে আমাদের সন্তানরা একটি বিশেষ জায়গায় বন্দি হয়ে আছে। গায়ক হওয়া বা আবৃত্তি করা সবার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই আমাদের শ্রোতা বাড়াতে হবে। সঠিক সংস্কৃতিচর্চার অভাবে উচ্চশিক্ষিত হয়েও মা-বাবা আর পরিবারের খবর নেওয়া থেকে অনেক দূরে চলে যাচ্ছে।’
সব শেষে বঙ্গবন্ধুর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে মন্ত্রী বলেন, “জাতির জনক বলেছিলেন, ‘আমি শুধু রাজনৈতিক ব্যক্তি, যার একার পক্ষে দেশ সঠিকভাবে চালানো কখনো সম্ভব নয়। তাই সংস্কৃতিমনা মানুষ, বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক থেকে শুরু করে সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে।’ এখানে ছাত্রলীগের যাঁরা আছেন, নেতৃত্ব দিচ্ছেন, আপনারা শুধু বক্তব্য দিলেই হবে না, বক্তব্য দেওয়ার সময় অনেক পাবেন, যা বলছেন বাস্তবায়নে কাজ করে দেখাতে হবে।”
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, ‘পুরান ঢাকার সাংস্কৃতিক ঐহিত্য হারিয়ে যাচ্ছিল। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের মধ্যদিয়ে হারানো ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে। বিগত কয়েক বছরে সংগীত বিভাগ, নাট্যকলা বিভাগ ও চারুকলা বিভাগের আবির্ভাবের ফলে এটা সম্ভব হচ্ছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নতুন বিভাগগুলোর কর্মকাণ্ড সম্প্রসারণের জন্য সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে সহযোগিতা সব সময় কাম্য।’
অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সপ্তাহ উদযাপন কমিটি ২০১৬-এর আহ্বায়ক ও বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিক্যুলার বায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. লাইসা আহমদ লিসা।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক প্রিয়ব্রত পাল বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা এবং ক্লাস চলার পরেও এখানে শিক্ষার্থীসহ সবার উপস্থিতি প্রমাণ করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কতটা সংস্কৃতির আবাদ করে। কোনো বিশ্ববিদ্যালয় কখনো এক স্থানে থাকে না, সময়ের প্রয়োজনে বিভিন্ন স্থানে যেতে পারে। বাইরে কোথাও আমাদের ক্যাম্পাস করা হলে আমরা মেনে নেব।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. হেলেনা ফেরদৌসী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এফ এম শরীফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক এস এম সিরাজুল ইসলাম, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।