শিশুদের সৃজনশীলতার সুযোগ দিলে মানবিক সমাজ গড়ে উঠবে
সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেছেন, ‘সন্তানদের কেবল প্রথম, দ্বিতীয় আর তৃতীয় করার প্রতিযোগিতা করলে শিশুদের মধ্যে যে সৃজনশীলতা রয়েছে তা একেবারে শুকিয়ে যাবে। তার চেয়ে তাদের মধ্যে যে সৃজনশীলতা রয়েছে তা বিকাশের সুযোগ দিলে দেশে একটি মানবিক সমাজ গড়ে উঠবে। তা না হলে জঙ্গিবাদের উত্থানের মধ্য দিয়ে দানবের সমাজ গড়ে উঠবে। আমরা কখনই দানবের সমাজ চাই না।’
মন্ত্রী আরো বলেন, ‘বর্তমানে দেশে কেবলমাত্র জিপিএ ৫-এর প্রতিযোগিতা চলছে। কোচিংনির্ভর আর পাঠ্যপুস্তকের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করাই অভিভাবকদের মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটিকে আমি বলি জিপিএ ৫ নির্যাতন।’
প্রতিটি শিক্ষার্থীর মধ্যে সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান নূর আরো বলেন, তাদের মধ্যে যে সম্ভাবনা আছে তাও আবিষ্কার করতে হবে। যাঁরা ছাত্রজীবনে ভালো ফলাফল করেননি, তাঁরাও জীবনে অনেক ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করেছেন।
সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর আজ শুক্রবার বিকেল ৪টায় নওগাঁর ঐতিহ্যবাহী জিলা স্কুলের শতবার্ষিকী উপলক্ষে দুদিনব্যাপী উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বেগম মাজেদা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য মো. আবদুল মালেক, সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য সাধন চন্দ্র মজুমদার, সাবেক সংসদ সদস্য বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ড. আকরাম হোসেন চৌধুরী, ঢাকার পুলিশ সুপার জেলা এবং স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র শাহ মিজান শাফিউর রহমান, নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশিদুল হক, পৌর মেয়র মো. নজমুল হক সনি, সদর উপজেলার চেয়ারম্যান আবু আবু বক্কর সিদ্দিক নান্নু, সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেজাউল বারী এবং জিলা স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও উৎসব কমিটির আহ্বায়ক আবদুল আজিজ সরকার প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় স্কুল চত্বর থেকে বের করা হয় এক বিশাল শোভাযাত্রা। হাতি, ঘোড়া এবং ব্যান্ডের সমন্বয়ে শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। শোভাযাত্রা উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র ও অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আলতাফ হোসেন।
স্কুলটি ১৯১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪২ সাল থেকে শুরু করে এই সময় পর্যন্ত দেশ-বিদেশ থেকে ছাত্র এবং শিক্ষকমণ্ডলী এতে অংশগ্রহণ করেন। এ উপলক্ষে জিলা স্কুলের মাঠ ছাত্র এবং শিক্ষকদের এক মহা মিলনমেলায় পরিণত হয়।